মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
জেলার রাজনীতি লালমনিরহাট

সমন্বয়হীন আওয়ামী লীগ অন্তঃকলহে বিএনপি

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগে সমন্বয় নেই। অন্তর্দ্বন্দ্বে জ্বলছে বিএনপি। আর জি এম কাদের ছাড়া গতিহীন জাতীয় পার্টি। সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন। আর টানা তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান। বর্তমানে চলছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের তোড়জোড়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও দলটিতে রয়েছে নানামুখী ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। একদিকে মোতাহার-মতিয়ার। অন্যদিকে গোলাম মোস্তফা স্বপন ও নজরুল ইসলাম পাটোয়ারী। আর অন্য প্রান্তে রুহুল আমিন বাবুল। তবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ সব গ্রুপের ঊর্ধ্বে থেকে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগকে সংঘবদ্ধ করে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের এই বেহাল অবস্থায় অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কমীরা সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও মতিয়ার রহমানের দিক-নির্দেশনায় চলছেন বলে জানিয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। অধিকাংশ প্রোগ্রাম নিয়ে বিভেদ থাকলেও বড় আকারে মুজিববর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের।

এবারের কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করার দাবি জানিয়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা। অনুপ্রবেশকারীরা যাতে দলে জায়গা না পান সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জেলা আওয়ামী লীগকে সতর্ক করেছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বিএনপির কিছুটা সাংগঠনিক গতি থাকলেও দলটিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়েছে। তবে নেতা-কর্মীদের পদ-পদবি নিয়ে অন্তর্কলহ দেখা দিয়েছে। সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু সভাপতি ও হাফিজুর রহমান বাবলাকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণার পরই শুরু হয় ব্যাপক অন্তর্দ্বন্দ্ব। ঘটেছে সংঘর্ষ ও পদত্যাগের ঘটনাও। হয়েছে মামলা। বিএনপির এই কমিটি ঘোষণার পর আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্ব নিয়ে দলের অনেক নেতা-কর্মী প্রশ্ন তুলেছেন। যোগ্য মূল্যায়ন না পাওয়ায় জেলা যুবদলের সভাপতি-সম্পাদকসহ কয়েকজন তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তবে এসব কিছুর পরও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দুলুর নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ রয়েছে লালমনিরহাট তথা রংপুর বিভাগের বিএনপির রাজনীতি। এদিকে এ কমিটির মেয়াদ প্রায় দুই মাস হলেও এখনো গঠন করতে পারেননি সদর উপজেলা ও পৌর শাখাগুলোর কমিটি। দলটির নেতাদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ের বাইরে তাদের কর্মসূচি পালনে কিছুটা বাধা রয়েছে। ফলে ঘরোয়া পরিবেশে তাদের দলীয় কার্যক্রম ও কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। লালমনিরহাট-সদর আসনের সংসদ সদস্য জি এম কাদের জেলা জাপাকে সংগঠিত করছেন। পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে দেশব্যাপী সুনাম থাকায় কাদেরকে নিয়ে গর্ববোধ করেন লালমনিরহাটের প্রান্তিক মানুষ।  জেলার ৫ উপজেলার মধ্যে অধিকাংশ উপজেলায় দলটির কমিটি নেই। কাদেরকে ছাড়া গতিহীন জেলা জাপার অন্য নেতা-কর্মীরা। প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা মিছিল-মিটিং না করলেও ভিতরে ভিতরে তারা সংগঠিত হচ্ছে। মসজিদ ও ইসলামী জলসাভিত্তিক ওয়াজ মাহফিলে তারা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেন। জেলায় অন্য কোনো দলের কার্যক্রম নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর