বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

দেড় শ বছরের বটগাছের ছায়ায় ঝানঝিরা বাজার

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দেড় শ বছরের বটগাছের ছায়ায় ঝানঝিরা বাজার

দেড় শ বছরের ঐতিহ্য হয়ে বাজারের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আজও ছায়া দিচ্ছে বটগাছটি। কারও কারও মতে, গাছটির বয়স দুই শ বছর। বটগাছের লতাগুলোই মাটিতে ঠেকে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাশেই রয়েছে একটি পাকুড়গাছ। স্থানীয়দের ধারণা, বটগাছটি পুরুষ এবং পাকুড়গাছটি নারী। তাই বটগাছ আর পাকুড় গাছের মধ্যে ধুমধাম করে বিয়েও দিয়েছিল স্থানীয়রা। এই বটগাছের চারপাশে প্রতিদিন বসে বাজার, রয়েছে একটি মন্দির। এই দেড় শ বছরের ঐতিহ্যবাহী বটগাছটির ছায়ায় বসে ঝানঝিরা বাজার। বিশেষ করে বাজারের মাঝখানে বটগাছটিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের ঝানঝিরা বাজারটিতে ব্যাপক মানুষের সমাগম হয়। বিবেচনা করা হয় বটগাছ আশ্রয় বা ভরসার প্রতীক। এ কারণেই বটগাছের সঙ্গে পরিবারের প্রধানের তুলনা করা হয়। আবহমান বাংলার গ্রামীণ জনপদে পথের ধারে, নদীর পাড়ে, হাটে অথবা জনবিরল স্থানে ডাল-পাতায় ভরা বটগাছ পথিকের বিশ্রামের জায়গা। মানুষ, পাখি, কীটপতঙ্গের অকৃত্রিম বন্ধু। বটগাছকে ঘিরে জমে ওঠে মানুষের আড্ডা, বিনোদন, সভা-সমাবেশ, মেলা ও হাটবাজার। সময়ের বিবর্তনে বটগাছের ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে গেলেও গ্রামীণ জনপদে এখনো টিকে আছে শত শত বছরের বটগাছ এবং তাকে ঘিরে রয়েছে নানা কল্পকাহিনী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে গাছটি নমস্য বটে। এখন ওই বটগাছটির পাতা ঝরে পড়ছে, নতুন পাতা আসছে। আবার অনেকে ওই গাছের অনেক ডালও কেটে ফেলেছে। এর পরেও ঐতিহ্য ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে গাছটি। এই গাছটির পাশেই দাঁড়িয়ে আছে পাকুড়গাছ। স্থানীয় মানুষের ধারণা, বটগাছটি পুরুষ এবং পাকুড়গাছটি নারী। তাই এলাকার মানুষ এক সময় বটগাছ আর পাকুড়গাছের মধ্যে ধুমধাম করে বিয়েও দিয়েছিল। দেড় শ বছরের গাছটি যিনি রোপণ করেছিলেন তার তিন পুরুষই আর বেঁচে নেই। তবে তাদের উত্তরাধিকারীরা বেঁচে আছেন। তাদের একজন গোপেন বাবু। তার বয়সও ৭৫ বছর। গোপেন বাবু জানান, ওই সময়ে ছায়া পাওয়ার জন্য বটগাছটি রোপণ করেছিলেন মৃত সূর্য নারায়ণ ও আমতারান। তার বাবা ক্ষেত্রমোহনের দাদা ছিলেন সূর্য নারায়ণ।

সর্বশেষ খবর