শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীর শপিং মলগুলো খোলা ক্রেতা কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শপিং মলগুলো খোলা ক্রেতা কম

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতান খুললেও মিলছে না কাক্সিক্ষত ক্রেতার দেখা। কোরবানির ঈদ আসন্ন হলেও দিনভর অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। লেনদেন চালু রাখতে নানা হারে মূল্যহ্রাসের প্রস্তাব দিয়েও ক্রেতা টানতে পারছেন না দোকানিরা। মোবাইল ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গেজেটের দোকানগুলোতে কিছু ক্রেতার আনাগোনা থাকলেও পোশাকের দোকানগুলো যেন খাঁ খাঁ করছে। অনেক দোকানে সারাদিনে বিক্রি হচ্ছে না দুটি পোশাকও। এ পরিস্থিতিতে দোকান ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, ইউটিলিটি বিল ও কর্মচারীর বেতন দেওয়া নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক দোকান মালিক।

গত দুই দিন রাজধানীর কয়েকটি শপিং মল ঘুরে ও  দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই সামনে এসেছে। তবে সংক্রমণ রোধে প্রায় সব শপিং মলেই দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা। বড় বড় শপিং মলের মূল ফটকে বসানো হয়েছে জীবাণুমুক্তকরণ টানেল। রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। অনেক মার্কেটে তাপমাত্রা মেপে ক্রেতাদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া মূল ফটক পার হয়ে মার্কেটের ভিতরে ঢোকার পর প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাকে আবার জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজধানীর বাড্ডা, নয়াপল্টন, পান্থপথ, কুড়িল, এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, নিউমার্কেট এলাকার ছোট-বড় শপিং মলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানে ঝুলছে ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ের সাইনবোর্ড। তারপরও নেই ক্রেতা। বড় দোকানগুলোতে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি। একজন ক্রেতা ঢুকলেই দোকানের দুই-তিনজন বিক্রয়কর্মী ছুটে যাচ্ছেন তার কাছে। অধিকাংশ ক্রেতাই পছন্দের পণ্যের দরদাম করে চলে যাচ্ছেন অন্য দোকানে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারাদিন দোকান খোলা রেখে কর্মচারীর বেতনই উঠছে না। নগরবাসী যেন  কেনাকাটায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। একমাসও বাকি নেই কোরবানির ঈদের। এ সময় ক্রেতার ভিড় সামলাতে  দোকানগুলোতে অস্থায়ী ভিত্তিতে অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার উল্টো অবস্থা। সংক্রমণ এড়াতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছি, তবুও ক্রেতা আসছে না। কিছু ক্রেতা আসছেন, দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় মানুষের হাতে নগদ টাকা নেই। এছাড়া রাজধানী ছেড়ে গেছে অনেক মানুষ। কেউ কেউ পরিবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন আর বিলাসী পণ্য কেনার মতো অবস্থা নেই কারও। এ কারণে দোকানগুলোতে বেচাকেনা একেবারেই নেই। সারাদিন বসে কিছু বিক্রি করতে পারলেই তবে ঘরে বাজার হচ্ছে অনেকের। প্রতিদিন শত শত দোকান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দেশে এক কোটি ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আছে। এভাবে চলতে থাকলে অর্ধেক নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হবে। তিন মাস বসে থেকে অনেকের পুুঁজি শেষ। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য রাখা প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনার অর্থ দ্রুত ছাড় দিলে হয়তো এই মানুষগুলো আবার দাঁড়াতে পারবে। এদিকে শপিং মলে ক্রেতা না থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে ঠিকই ভিড় দেখা গেছে। ফুটপাথে বসা কাঁচাবাজারগুলো লোকে-লোকারণ্য। তবে এসব স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায়নি ক্রেতা-বিক্রেতা কারোর মধ্যেই। গায়ে গায়ে মিশে চলছে কেনাকাটা। মাস্কও পরছেন না অনেকে।

সর্বশেষ খবর