বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চরম হঠকারী সিদ্ধান্ত

-বদিউল আলম মজুমদার

চরম হঠকারী সিদ্ধান্ত

সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ইসিকে চিঠি দিয়ে বলেছে আরপিও সংশোধনের প্রয়োজন নেই। ইসি কারও সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এ সংশোধন করছে। আরপিও সংশোধন ইসির চরম হঠকারী সিদ্ধান্ত। তারা শুধু আমাদের ভোটাধিকার হরণ করেই ক্ষান্ত হননি, নির্বাচন কমিশনকে চিরতরে পঙ্গু করার চেষ্টা করছেন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হলো, যে কাজে তাদের নিবিষ্ট থাকা দরকার অর্থাৎ আরপিওসহ বিদ্যমান নির্বাচনী আইনগুলোর সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ; তা না করে কমিশন যেন অকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, তবে জরুরি ভিত্তিতে একটি আইন প্রণয়ন করা দরকার, যেদিকে কমিশন ভ্রুক্ষেপ করছে না। আমাদের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া আছে, কিন্তু গত ৪৮ বছরেও কোনো সরকারই তা করেনি। ড. শামসুল হুদা কমিশন এ লক্ষ্যে একটি আইনের খসড়া তৈরি করে রেখে গেছে এবং আমরা সুজনের উদ্যোগে একে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করে যুগোপযোগী করেছি। আমরা আশা করি, কমিশন এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির দিকে নজর দেবে এবং নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের একটি আইনের খসড়া তৈরি করে সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে। আমরা এ ব্যাপারে কমিশনকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। এই নির্বাচন বিশ্লেষক আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের আরেকটি চরম বিতর্কিত উদ্যোগ হলো আরপিও সংশোধনের অপচেষ্টা। এ প্রস্তাবে যেসব বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে তার অন্যতম হলো কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক ভোট গ্রহণ বন্ধ করা, সর্বোপরি আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের (৯১ই ধারা) ক্ষমতা রোধ। এসব ক্ষমতা রোধ করলে কমিশন একটি ঠুঁটো জগন্নাথে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে, যার মাধ্যমে কার স্বার্থসিদ্ধি হবে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি উল্লেখ করেন, রকিবউদ্দীন কমিশন এ ধারাটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করে। কিন্তু ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে তারা সে উদ্যোগ থেকে পিছপা হয়। বর্তমান কমিশন সম্পূর্ণ গোপনে এটি বাতিলের উদ্যোগ নেয়। তবে বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় তারা এখন ৯১ই ধারা বাতিলের উদ্যোগ থেকে সরে এসেছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত সাড়ে তিন বছরে তাদের মেয়াদকালে অনেক অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের জনস্বার্থবিরোধী মানসিকতারই প্রকাশ পায়নি, তাদের অসততা ও অযোগ্যতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তবে তাদের সবচেয়ে ভয়ানক অপচেষ্টা হলো আমাদের নির্বাচনব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া। তা করেই বর্তমান কমিশন ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে স্থায়ীভাবে পঙ্গু করার জন্যও যেন উঠে-পড়ে লেগেছে। আমরা জানি না কাদের নীলনকশা তারা বাস্তবায়ন করছে। ফলে নাগরিক হিসেবে আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর