বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী শিশুরা!

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ২৫৮২, মৃত্যু ৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে ষাটোর্ধ্বদের। অন্যদিকে সবচেয়ে কম মৃত্যু হচ্ছে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনই ষাটোর্ধ্ব। এই সময়ে ১০ বছরের কম বয়সী কোনো শিশুরই মৃত্যু হয়নি। এখন পর্যন্ত দেশে করোনা সংক্রমণে মারা যাওয়া ৪ হাজার ৩৫১ জনের মধ্যে ৪৯ দশমিক ৬০ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। আর ১০ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার মাত্র দশমিক ৪৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে এমনটা জানা গেছে। করোনায় শিশুদের কম মৃত্যুর রহস্য কী- জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোন প্রতিরোধ ক্ষমতার বলে শিশুরা ভাইরাসটিকে প্রতিহত করছে সেটা নিয়ে গবেষণা চলছে। এখনো এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে বৃদ্ধ ও শিশুরা সহজে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। করোনাভাইরাস বৃদ্ধদের সহজে আক্রান্ত করতে পারলেও শিশুদের ওপর খুব কম প্রভাব ফেলতে পারছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে করোনা সংক্রমণের প্রথম তিন মাসে কোনো শিশুই মারা যায়নি। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশে করোনা সংক্রমণের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ২০৪টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে ২ হাজার ৫৮২ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৩৯ জন। দেশে এ পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫২৮ জনের। মোট মারা গেছেন ৪ হাজার ৩৫১ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, করোনা সংক্রমণে এখন পর্যন্ত ষাটোর্ধ্ব মানুষ মারা গেছেন ২ হাজার ১৫৮ জন, যা মোট মৃত্যুর ৪৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। ১০ বছরের কম বয়সী শিশু মারা গেছে ১৯ জন, যা মোট মৃত্যুর দশমিক ৪৪ শতাংশ। বয়সের ধাপ কমার সঙ্গে সঙ্গে কমেছে মৃত্যুহার। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৫ জনের ২৪ জন ষাটোর্ধ্ব, সাতজন পঞ্চাশোর্ধ্ব, তিনজন চল্লিশোর্ধ্ব, একজন ত্রিশোর্ধ্ব। ৩০ বছরের কম বয়সী কেউ এই সময়ে মারা যাননি। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৫ জনের সবারই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। এর মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী। মৃতদের ২২ জন ঢাকা, চারজন চট্টগ্রাম, চারজন খুলনা, দুজন সিলেট এবং একজন করে রাজশাহী, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো আরও খবর-শেরপুর : করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের গরুহাটি এলাকায় গতকাল বিকালে আশ্রাব আলী (৮০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলার ১১ জনের মৃত্যু হলো করোনা সংক্রমণে। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪৩২ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৩৭৭ জন। গাজীপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ২৩ জনে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ১৬৪ জন। মারা গেছেন ৬২ জন।

চট্টগ্রাম : গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ১৯২ জনে। করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

দিনাজপুর : গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৮ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ১৩৫ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬১৭ জন।

টাঙ্গাইল : সখীপুরের বাসিন্দা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব মো. খলিলুর রহমান মিঞা করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল ভোরে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী সম্মিলিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৮ জনে। মোট মারা গেছেন ৪৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৫৪ জন।

সর্বশেষ খবর