শনিবার, ২৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বারবার ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই

ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আহাজারি

প্রতিদিন ডেস্ক

বারবার ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের তান্ডবে লন্ডভন্ড কুয়াকাটা সৈকত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এখনো আহাজারি করছেন। উপকূলীয় এলাকায় বসবাস করা এসব মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন মাছের ঘের, ফসলি জমি, খামার, বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, প্রতি বছরই বারবার তারা এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় তারা গতকালও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে দাবি করেছেন, ‘আমরা বারবার ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই।’ তারা টেকসই নিরাপত্তা দাবি করেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা উপকূলের জানমালের সুরক্ষায় অবিলম্বে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা। গতাকাল সকাল ১০টায় শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালী পয়েন্টে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের ওপর এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে স্থানীয়রা ‘আমরা ভাসতে চাই না, বাঁচতে চাই’, ‘একবারই মরব, বারবার নয়’, ‘জলবায়ু তহবিল কাদের জন্য জবাব চাই’, ‘উপকূলের কান্না, শুনতে কি পান না’, ‘নিরাপদে বাঁচা, নয় কি আমার অধিকার’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় প্রতীকী লাশ হয়ে প্রতিবাদ জানান উপকূলের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ, ইয়াসির আরাফাত, সালাউদ্দিন, মাহি ও সালাউদ্দিন জাফরী।

উপকূলের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ম্যানগ্রোভ স্টুডেন্ট সোসাইটি আয়োজিত এ অবস্থান কর্মসূচিতে সংগঠনের সভাপতি আরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহিন বিল্লাহ, তরিকুল ইসলাম, মুহতারাম বিল্লাহ, মুতাসিম বিল্লাহ, হাসানুল বান্না প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, সিডর, আইলা, ফণী, বুলবুল, আম্ফান ও সবশেষ ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদীর জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে শতাধিক গ্রাম। ভেসে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির মাছের ঘের। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। প্রতি বছর বারবার এমন হচ্ছে, কিন্তু টেকসই নিরাপত্তাব্যবস্থা মিলছে না।

সাতক্ষীরা : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাতক্ষীরায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চিংড়ি চাষিরা। এ সময় কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, কাকশিয়ালিসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চ জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে সুন্দরবনসংলগ্ন চার উপজেলার ২৭ ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়। প্লাবিত হয় প্রায় ৭ হাজার চিংড়ি ঘের। ভেসে গেছে ৫৫ কোটি টাকার মাছ। গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই ইয়াস উপকূলবাসীকে এভাবে সর্বস্বান্ত করেছে। এ অবস্থায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের কাছে সুদমুক্ত ঋণ চান ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ও চিংড়ি চাষিরা।

খুলনা : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রা, পাইকগাছায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামতে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপকূলবাসী। তবে জরাজীর্ণ কয়েকটি পয়েন্টে গভীর রাত পর্যন্ত মাটি ও জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ মেরামত করলেও সকালের জোয়ারে তা ভেসে যাচ্ছে। ফলে লবণপানিতে তলিয়ে গেছে মিষ্টি পানির পুকুর, মাছের ঘের ও ফসলি জমি।

এদিকে জীবন-জীবিকা বাঁচাতে খুলনা, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন স্থানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগীরা। গতকাল খুলনা মহানগরীর শিববাড়ী মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের মতো খুলনা-সাতক্ষীরা পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করে মানুষের জানমাল রক্ষা করতে হবে। এতে শুধু পর্যটনশিল্প নয়, মানুষের জীবনমানও উন্নত হবে। দক্ষিণবঙ্গ স্বেচ্ছাসেবী ঐক্য পরিষদের আয়োজনে খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও ফুড ব্যাংকের সহযোগিতায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া সাতক্ষীরা উপকূলের জানমালের সুরক্ষায় অবিলম্বে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয়রা।

চট্টগ্রাম : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বেড়েছে জোয়ারের পানি, বেড়েছে সাগরজলের উচ্চতা। ফলে জোয়ারের পানিতে চট্টগ্রাম মহানগরের অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। গতকাল মহানগরের অনেক এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানি বাড়ছে বলে জানা গেছে। এদিকে গতকাল দিনভর ছিল প্রখর রোদ, সঙ্গে ছিল গরমের তীব্রতা। কিন্তু আবহাওয়ার এমন সময়েও মহানগরের অনেক রাজপথ, অলিগলিতে ছিল হাঁটুপানি। পানি মাড়িয়েই চলেছে বাস, ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশাসহ যানবাহন। মহানগরের চাক্তাই খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলা, জিইসি, ২ নম্বর গেট, বায়েজীদ, সিডিএ অ্যাভিনিউ, আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক, শান্তিবাগ, হালিশহর আবাসিক এলাকা, চান্দগাঁও আবাসিক, বাকলিয়াসহ বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী ও সন্দ্বীপ উপকূলীয় এলাকার ফসলি জমিতে প্রবেশ করেছে বঙ্গোপসাগরের লবণাক্ত পানি। এ কারণে সাধারণ ফসল উৎপাদনের অন্তরায় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া জোয়ারের পানির স্রোতে চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলা আনোয়ারা ও বাঁশখালী বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকতৃা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ফসলি জমিতে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করেছে। এ কারণে অন্তত আগামী দুই বছর এসব ফসলি জমি উৎপাদনক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।’

বাগেরহাট : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বলেশ্বর, পশুর, পানগুছি, দড়াটানা, ভৈরবসহ নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকালও নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে ডুবে গেছে মাছের খামার, পানের বরজ ও শাকসবজির খেত। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী চার উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপালে এখনো এখনো পানিবন্দী প্রায় ৪ হাজার মানুষ। জোয়ারের পানিতে নতুন করে পশুর নদতীরবর্তী মোংলা উপজেলার কানাইনগর, চিলা, জয়মণি, বিদ্যারবাহন, শেলাবুনিয়াসহ ১০-১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মোরেলগঞ্জের ছোলমবাড়িয়া ফেরিঘাট ৪ ফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাইনবোর্ড-শরণখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহন পারাপার দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ উপজেলার পানগুছি নদীর দুই তীরের গ্রামগুলোয় এখনো প্রায় ২ হাজার মানুষ পানিবন্দী। জোয়ারের অথই পানিতে চার দিন ধরে ডুবে আছে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র। এ অবস্থায় হরিণ, কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বাটাগুল বাচকা কচ্ছপের শেডের প্রতিরক্ষা দেয়াল পানির চাপে ভেঙে পড়লে এ কেন্দ্রের ৬৫৬টি প্রাণী ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বরিশাল : ইয়াসের প্রভাব কেটে গেলেও পূর্ণিমার কারণে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার এখনো অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ভোর রাতের জোয়ারে বরিশাল শহরের নিম্নাঞ্চলসহ নদীতীরবর্তী বহু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে ইয়াস ও পূর্ণিমার কারণে নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন নদীতীরের ১২টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে বেশ কিছু গ্রাম।

পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিণাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সরকার জানান, ইয়াস ও পূর্ণিমার কারণে সাগরে পানির চাপ বাড়ায় বরগুনা সদরে বেড়িবাঁধের চারটি, বামনায় দুটি, বেতাগীতে একটি, পাথরঘাটায় একটি ও আমতলীতে একটি; পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নিজামপুরে একটি ও ধুলাসারে একটি এবং ভোলার মনপুরায় একটি- মোট ১২টি পয়েন্টে প্রাথমিকভাবে এক থেকে দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নোয়াখালী : দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে তিন দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল আবার নৌ পরাপার শুরু হয়েছে। সকালে হাতিয়ার চেয়ারম্যানঘাট, চতলার ঘাট, নলচিরা ও তমরদ্দি ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। তবে সরকারি সিট্রাক বন্ধ থাকায় নৌকা ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে বুধবার জোয়ারে পানিতে নিখোঁজ এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ লিমা আক্তার (৭) উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের জগলুলের মেয়ে। গতকাল সকালে লাশটি বেড়িবাঁধের বামফহরে আটকে থাকা জোয়ারের পানিতে ভেসে ওঠে। পরিবারের লোকজন লাশটি বাড়িতে নিয়ে যায়।

পটুয়াখালী : পটুয়াখালীর উপকূলজুড়ে তিন দিন ধরে উচ্চ জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন জেলার ২৩২টি গ্রামের অন্তত ৬ লাখ মানুষ।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : ইয়াস ও পূর্র্ণিমার প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের অস্বাভাবিক জোয়ারের তান্ডবে কুয়াকাটা সৈকত ল-ভ- হয়ে গেছে। জিরো পয়েন্ট থেকে পুব দিকে কাউয়ার চর পর্যন্ত সৈকতের সংরক্ষিত বনের সর্বত্র এখনো ধ্বংসের ছাপ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটকদের বিনোদন কেন্দ্র কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান। সৈকতে থাকা ঝাউবন, নারিকেলকুঞ্জ, তালবাগান, শালবনসহ শুঁটকিপল্লী তছনছ হয়ে গেছে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য পর্যটকদের জন্য সেজে থাকা পুরো সৈকত যেন ল-ভ- হয়ে গেছে। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘সমুদ্রসৈকতের প্রায় ১০০ ফুটের মতো সাগরগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিনটি মার্কেট, একটি হোটেলসহ দেড় শতাধিক দোকান ভেঙেচুরে গেছে।’

এদিকে কলাপাড়ায় বিধ্বস্ত বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী। বেলা ১১টায় মহিপুর সদর ইউনিয়নের নিজামপুর ভাঙনকবলিত বাঁধের ওপর ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে নিজামপুর, কমরপুর ও সুধীরপুর গ্রামের শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন নিজামপুর গ্রামের মো. নূরুজামাল, মালেক ফরাজীসহ অনেকে। বক্তারা বলেন, সরকারের কাছে ত্রাণ সহায়তা চাই না, আমরা চাই স্থায়ী বাঁধ। তাই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

মুন্সীগঞ্জ : ইয়াসের প্রভাব কেটে যাওয়ায় দীর্ঘ ৩৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল সকালে শুরু হয় ফেরি চলাচল, সকাল ১০টায় শুরু হয় লঞ্চ চলাচল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের পরিদর্শক মো. সোলেমান বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় নৌরুটে আবারও ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। বর্তমানে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ১৪টি ফেরি ও ৮৫টি লঞ্চ সচল রয়েছে। নিয়ম মেনে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ও বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা-যাওয়া করছে।’

বরগুনা : প্রবল জোয়ারের তোড়ে বরগুনার বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ভেঙে ফসলের মাঠে ও লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে রোপা আউশসহ কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া চাষিদের কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের দাবি, সিডরের মতো সুপার সাইক্লোনের পর দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ইয়াসে তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সম্পদ। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘বরগুনায় ইয়াসের কারণে ছয় উপজেলার ১ হাজার ২৪৯টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। পুকুর ও ঘের মিলিয়ে ৬০ মেট্রিক টন মাছ জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে।’

ঝালকাঠি : কাঁঠালিয়ার বিষখালী নদীর তীরে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান গতকাল বিকালে উপজেলার আমুয়া উত্তরপাড় জিরো পয়েন্টে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘জানতে পারলাম, কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদীতে কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের সময় এ এলাকা প্লাবিত হয়। তাই এখানে একটি বেড়িবাঁধের গুরুত্ব আছে। আপনারা বেড়িবাঁধের দাবি করে আসছেন। তাই অবিলম্বে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর