শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মেয়ের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, ভ্যানচালক বাবার স্বপ্ন পূর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

মেয়ের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, ভ্যানচালক বাবার স্বপ্ন পূর

স্ত্রী, এক ছেলে, তিন মেয়ে আর বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সাত সদস্যের সংসারে কর্তা আফতাবর রহমান। তার আয়ের উৎস ভ্যানগাড়ি। নিজস্ব জমিজমা না থাকলেও রিকশাভ্যান চালিয়ে তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধারিয়া বেলসাড়া গ্রামের আফতাবর।

ভ্যান চালিয়ে সারা দিনে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি খরচ করতেন সন্তানের পড়াশোনায়। ভ্যান চালিয়ে উপার্জন করে ছেলে মুন্নাকে ভর্তি করিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় মেয়ে আলপনা আক্তার ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। ছোট মেয়েকে এইচএসসিতে পড়াচ্ছে। ভ্যানচালক আফতাবরের সন্তানদের এমন সফলতায় পরিবারসহ এলাকায় আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। আলপনা আক্তার বলেন, যার অনুপ্রেরণায় এ সফলতা তিনি আমার বাবা। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ বহন করেছেন। বাবা আমাকে কখনো অভাব বুঝতে দেননি। বাবার পাশাপাশি মা অনেক পরিশ্রম করেছেন। আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। আমি মনে করি দারিদ্র্য সফলতার অন্তরায় নয়। স্বপ্ন আর পরিশ্রম একসঙ্গে করলে সফল হওয়া সম্ভব। আলপনার বাবা আফতাবর রহমান বলেন, টাকার অভাবে বড় মেয়েকে পড়াতে পারিনি। পরে স্বপ্ন দেখেছি বাকি সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করব। আমার ২৫ শতক আবাদি জমি ছিল। ছেলেকে ভর্তির জন্য পাঁচ শতক আর মেয়েকে পড়াশোনা করানোর জন্য বাকি ২০ শতক জমিও বিক্রি করেছি। এখন ভ্যান আর ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নাই। তারপরও আজ আমি অনেক খুশি। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, ডাক্তারি পড়ায় অনেক খরচ। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব। যদি সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হয় তাহলে আমার কষ্ট কিছুটা কম হবে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) যোবায়ের হোসেন বলেন, যদি আলপনার বাবা চান তাহলে তার পড়াশোনার খরচ বহনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে উপজেলা প্রশাসন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর