সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
জাপান পর্যন্ত সুনামির সংকেত

তাইওয়ানে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

প্রতিদিন ডেস্ক

তাইওয়ানে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

তাইওয়ানে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবন -এএফপি

যুদ্ধের উত্তেজনা নিয়ে আলোচনায় থাকা তাইওয়ানে দফায় দফায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূকিম্প আঘাত হানার পর গতকাল দুপুরে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার আরেকটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে খবরে বলা হয়, কম্পনে বহু ভবন, সড়ক ও রেলপথ বিধ্বস্ত হয়েছে। হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, সিএনএন।

মার্কিন ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, উপকূলীয় শহর তাইতুংতে গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৪ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৪৪ মিনিটে) ভূমিকম্প বড় আকারে অনুভূত হয়। এর গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। অবশ্য এর আগের রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

খবরে বলা হয়, তাইওয়ানে ভূকিম্পের সময় এর কম্পন অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী চীন, জাপান, ফিলিপাইনেও। কম্পনের পর পরই সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। ভূমিকম্পের কারণে এ সময় ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে উপকূলরেখা বরাবর বিপজ্জনক সুনামির আশঙ্কার আভাস দেওয়া হয়। আরেক খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পের প্রভাবে পাথরধসে তাইওয়ানের শিকে ও লুইশিশি পার্বত্য এলাকার একটি সড়ক বন্ধ হয় যায়। ওই সড়কে আটকা পড়েন ৬ শতাধিক মানুষ।

তাইওয়ানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (সিএনএ) তথ্য অনুযায়ী, তাইওয়ানের সব এলাকায় অনুভূত হয়েছে কম্পন। এতে সব ভবন কেঁপে উঠেছে এবং দ্বীপরাষ্ট্রের সব রেললাইন আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। সিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূমিকম্পে তাইওয়ানের ইউলি শহরে একটি ভবনধসে দুজন আটকা পড়েছিলেন। তাদের ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

এ ছাড়া একটি সেতু ভেঙে পড়ায় তার ওপরে থাকা একটি গাড়ি পড়ে গিয়ে তিনজন আহত হয়েছেন। ট্রেনের লাইন বেঁকে যাওয়ায় পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডংলিতে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে, এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।

এদিকে এই ভূমিকম্পের পর জাপানের দিকে ধেয়ে যাচ্ছিল মহাপ্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় নানমাদোল। রাতের কোনো এক সময় এ ঘূর্ণিঝড় সুপার তাইফুন আঘাত হানতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়। ভয়ংকর এ প্রলয় থেকে বাঁচাতে জাপানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ দেশটির কাগশিমা, কুমামতো, মিয়াজাকি ও দক্ষিণ কিয়োশো থেকে ২০ লাখ মানুষকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়। জাপানের জাতীয় আবহাওয়া অধিদফতর এ ঘূর্ণিঝড়কে ‘ধ্বংসাত্মক’ হিসেবে উল্লেখ করে দক্ষিণ দিকে থাকা উপকূলীয় লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই অনুরোধ জানিয়ে যাচ্ছিল। উল্লেখ্য, দুটি টেকনোটিক প্লেটের কাছে অবস্থান হওয়ায় তাইওয়ানে নিয়মিত ভূমিকম্প হয়। গত মার্চে দ্বীপটিতে আঘাত হেনেছিল ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প। এতে পূর্বাঞ্চলে একটি অর্ধনির্মিত সেতু ধসে পড়েছিল। ২০১৮ সালেও দেশটির জনপ্রিয় পর্যটন শহর হুয়ালিয়েনে আঘাত হেনেছিল ৬ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। এতে অন্তত ১৭ জন প্রাণ হারান, আহত হন আরও ৩০০ জন। ২০১৬ সালে তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলে এক ভূমিকম্পে মারা যান শতাধিক মানুষ। আর ১৯৯৯ সালে দ্বীপটিতে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণহানি হয়েছিল ২ হাজারের বেশি মানুষের।

সর্বশেষ খবর