আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান (নাক-কান-গলা) অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী বলেছেন, শব্দদূষণে প্রথম আক্রান্ত হয় কান বা শ্রবণশক্তি। এতে বধিরতা সৃষ্টি হয়। এর পরই আক্রান্ত হয় মস্তিষ্ক। দীর্ঘ সময় উচ্চ শব্দের মধ্যে থাকলে কম শোনা, মাথা ঘোরাসহ নানা শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। দৈনিক ৬ ঘণ্টার বেশি উচ্চ শব্দের মধ্যে টানা পাঁচ-সাত বছর থাকলে স্থায়ীভাবে বধিরতা সৃষ্টি হতে পারে। স্মৃতি লোপ, হাইপারটেনশন, এমনকি ব্রেন টিউমারেরও একটি কারণ শব্দদূষণ।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শ্রবণশক্তির সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অসংখ্য মানুষ এখন হিয়ারিং এইড ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ‘এমন রোগীও পেয়েছি যিনি সরকারি অনুষ্ঠানে তোপধ্বনির পাশে থাকায় হঠাৎ বধির হয়ে গেছেন। অবশ্য চিকিৎসায় ছয় মাসের মধ্যে ঠিকও হয়েছেন।’ তিনি বলেন, মোবাইলের ভলিউম বাড়িয়ে দীর্ঘ সময় কথা বললে কানের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া কনসার্ট, হাইড্রোলিক হর্ন, অ্যাম্বুলেন্সের হর্ন, নির্মাণকাজে পাথর ভাঙা, টাইলস ও রড কাটায় উচ্চমাত্রার শব্দদূষণ হচ্ছে। ডা. আলমগীর চৌধুরী বলেন, কানের ভিতরে রিসেপ্টর শব্দতরঙ্গ ধারণ করে ককলিয়ার নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায়। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত শব্দ এ রিসেপ্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দিনের পর দিন লম্বা সময় ধরে কেউ ৭০ ডেসিবলের ওপর শব্দের মধ্যে থাকলে তার শ্রবণশক্তি ক্রমে কমে যেতে থাকে। তিনি যে বধিরতায় ভুগছেন তা অনেক সময় নিজেও টের পান না। সারাক্ষণ হর্ন বাজানো গাড়িচালক নিজেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবাসিক এলাকায় ঘরের ভিতরে থেকেও গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ বা মাইকের শব্দে একজন মানুষ শব্দদূষণের শিকার।