রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ঢাকার সীমানা এলাকায় দূষণ সর্বোচ্চ

- ড. আবদুস সালাম

ঢাকার সীমানা এলাকায় দূষণ সর্বোচ্চ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বায়ুদূষণবিষয়ক গবেষক ড. আবদুস সালাম বলেছেন, সাধারণত শুষ্কতার কারণে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বায়ুদূষণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় দূষণের এই সময়সীমাও বেড়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ দূষণ বাড়ছে। ঢাকার কেন্দ্রস্থলের তুলনায়  নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, গাবতলী, টঙ্গীর কাছাকাছি উত্তরার শেষ দিকটায় দূষণ অনেক বেশি। মূলত সব ধরনের গাড়ির প্রবেশমুখ ও অধিকমাত্রায় নির্মাণ কাজ চলায় এই দূষণ।

তিনি বলেন, সারা দেশের ৯০টি স্থানে আমরা বায়ুমান পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করেছি। ঢাকা শহরেই ৬৫টি স্থানে এ যন্ত্র স্থাপন করেছি। এ ছাড়া ভোলাতেও যন্ত্র বসিয়েছি। তাতে দেখা গেছে বঙ্গোপসাগরের ওপরের বাতাসও ভয়াবহ দূষণের কবলে। যদিও ঢাকার চেয়ে সেই দূষণ কম, তবে তা অস্বাস্থ্যকর। মূলত ওইসব এলাকাতেও নির্মাণকাজ বেড়েছে। এ ছাড়া এদিককার দূষণ বাতাসে ভেসে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাচ্ছে। শীত এলে উত্তর থেকে বাতাস দক্ষিণ দিকে যায়। এ কারণে বঙ্গোপসাগরের ওপারের বাতাসও দূষিত হয়ে পড়ছে।

অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, পর্যবেক্ষণে দেখেছি ঢাকার বাতাস সবচেয়ে দূষিত থাকে রাতে। সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত দূষণ বাড়তে থাকে। এর মূল কারণ হলো রাতে সারা দেশ থেকে ঢাকায় ডিজেলচালিত হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে। এগুলোর ধোঁয়ায় বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এ ছাড়া রাতে বাতাসের আর্দ্রতা বাড়ে। এতে বাতাসের বাউন্ডারি লেয়ার নিচে নেমে আসে। সারাদিন যেসব ধুলা বাতাসে ওড়ে, সেগুলো সন্ধ্যার পর নিচে নামতে শুরু করে। সন্ধ্যার সময়ই বায়ুমান যন্ত্র থেকে আমার মোবাইলে অ্যালার্ট আসতে থাকে। অনেক সময় বাতাসে পিএম-২.৫-এর মাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ২৫০ থেকে ৩০০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত উঠে যায়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া সীমার (২৪ ঘণ্টার গড়) ৩০-৩৫ গুণ বেশি। তিনি বলেন, চালের তাতাল, ইটভাটা এগুলোও চলে শীতকালে। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, বিভিন্ন নির্মাণ কাজ, ট্রাফিক জ্যাম তো আছেই। এসব নিয়ে অনেক দিন ধরেই কথা বলছি। কিন্তু যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা হচ্ছে না। দূষণের উৎস বন্ধ করতে আইন আছে। আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করলে দূষণ এমনিতেই কমে আসবে। নিজেদের বাঁচাতে আমরা বাইরে মাস্ক পরতে পারি। এ ছাড়া একজন সুনাগরিক হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। আমি যে নির্মাণ কাজ করছি সেখান থেকে যেন দূষণ না হয়, আমি যে গাড়িটি চালাচ্ছি তা যেন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করি, দীর্ঘ সময়ের যানজটে যেন গাড়ির স্টার্ট বন্ধ রাখি- তা হলেই দূষণ কমবে।

সর্বশেষ খবর