যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালী গ্রামের বাসিন্দা আঞ্জুয়ারা বেগমের বাড়িতে থাকা চালের ড্রাম থেকে চার বছর বয়সী একটি শিশুর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর এক দিন আগে শুক্রবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ আঞ্জুয়ারা বেগমকে আটক করেছে। নিহত শিশু সানজিদা ওই গ্রামেরই সোহেল হোসেনের মেয়ে। অন্যদিকে বগুড়ার আদমদীঘিতে বিয়ের ৬ মাস পর সৈয়দা সারাহ্ প্রিয়াসা (২৩) নামের এক গৃহবধূর গলায় ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। প্রিয়াসা উপজেলার ডহরপুর গ্রামের নাসরুল্লাহ হক ঐক্যের স্ত্রী। গতকাল দুপুরে নিহতের লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর স্বামীকে আটক করা হয়েছে। নিহত প্রিয়াসার পরিবারের দাবি, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
আদমদীঘি থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি রহিম উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল হক পল্টুর ছেলে নাসরুল্লাহ হক ঐক্যের সঙ্গে নওগাঁর চাকলা বক্তারপুর গ্রামের জসিম উদ্দিনের মেয়ে সৈয়দা সারাহ্ প্রিয়াসার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১১ এপ্রিল তারা বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যেও মনোমালিন্য চলে আসছিল। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বামীর বাড়ি ডহরপুর গ্রামে ওই গৃহবধূর শয়ন ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস লাগানো লাশ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহত প্রিয়াসার মা ইয়াছমিন খাতুন জানান, পারিবারিক কলহের কারণে তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা করেছে বলে চালানো হচ্ছে।
গৃহবধূর চাচাশ্বশুর আনিছুল হক নান্টু জানান, বিকালে গৃহবধূকে তার স্বামী বেড়াতে নিয়ে না যাওয়ায় অভিমানে আত্মহত্যা করেছে। আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা জানান, মৃত্যুটি রহস্যজনক হওয়ায় গৃহবধূর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ওই গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ মামলা দায়ের করেননি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এদিকে যশোর ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম বলেন, শিশু সানজিদা নিখোঁজের ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী আঞ্জুয়ারা বেগম নামে এক নারীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি চালের ড্রামে শিশুর লাশ রাখার কথা স্বীকার করেন। শনিবার গভীর রাতে আঞ্জুয়ারার ঘরের চালের ড্রাম থেকে গামছা ও ওড়না দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশী ওই নারী শিশুটিকে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।