রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

গণধর্ষণের শিকার কিশোরী সানজিদা মারাই গেল

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীতে সানজিদা আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসার অভাবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে অবশেষে মারা গেছে। গতকাল শহরের সাটিরপাড়া ইউএমসি এলাকায় ভাড়া বাসায় সে মারা যায়। তার পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

স্বজনরা জানান, ধর্ষণের পর আসামি রফিককে (৫০) এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দেয়। অন্য আসামি ফয়সাল ও ফারুক বিভিন্নভাবে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জন্যও নানাবিধ ভয়ভীতি দেখান। এ ঘটনার পর থেকে সানজিদা তার কর্মস্থল মমিন টেক্সটাইলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এ ছাড়া ধর্ষণের মতো                 জঘন্যতম ঘটনার পর একদিকে ঘরবন্দি, অন্যদিকে বাবা হারিছুল হক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সানজিদা আক্তার। ঘটনার পর তার মা ভয়ভীতির কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। জানা যায়, সানজিদা আক্তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করত সাটিরপাড়া ইউএমসি এলাকার শফি হাজির বাড়িতে। তারা তিন বোন মমিন টেক্সটাইল মিলে শ্রমিকের কাজ করত। এরই মধ্যে সানজিদার ওপর চোখ পড়ে প্রতিবেশী রফিক মিয়ার। তিনি সানজিদাকে প্রায়ই অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। এতে সাড়া না মেলায় ৭ অক্টোবর রাতে রফিক, ফয়সাল ও ফারুক মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ঘটনার বিষয়টি কাউকে জানালে বা মামলা করলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। ঘটনার সাত দিন পর ১৪ অক্টোবর সানজিদা নিজেই বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ প্রধান আসামি রফিক, সহযোগী ফয়সাল ও ফারুককে গ্রেফতার করে। রফিক, ফয়সাল ও ফারুক কিছুদিন জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি লাভ করেন। আসামিরা জামিনে বের হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এতে সানজিদা আক্তার একদিকে মানসিক চাপ, অন্যদিকে চিকিৎসার অভাবে ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। অবশেষে মৃত্যুবরণ করে।

গ্রেফতার রফিকুল ইসলাম রফিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আকানগর এলাকার সাইজ উদ্দিনের ছেলে। সানজিদাদের বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল রসুলপুরে। তার বাবার নাম হারিছুল হক।

সর্বশেষ খবর