মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

চকচকে নীলচে বেগুনি বিরল কালিম পাখি দেখতে ভিড়

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

চকচকে নীলচে বেগুনি বিরল কালিম পাখি দেখতে ভিড়

প্রকৃতি থেকে দিন দিন হারিয়ে যাওয়া চকচকে নীলচে বেগুনি ‘কালিম’ পাখিকে অঞ্চলভেদে কালেম, কায়ুম, কালাম, কামিয়া, করমা ও সুন্দরী নামে ডাকা হয়। এই বন্য পাখি হাওর, বাঁওড়, খাল, বিল, নদী ও জলাশয়ে দেখা মেলে। বন্য কালিম পাখি দলবেঁধে থাকতে পছন্দ করে। আবার এই পাখি বাড়িতেও পোষা যায়। ছোট থেকে এদের ছেড়ে দিয়ে লালন-পালন করলে পোষ মেনে যায়। পোষ মানলে কালিম পাখি আর উড়ে যায় না। অনেকে শখের বসে এটি পালন করেন। পোষ মানার পর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় পাখিদের সঙ্গে। তবে যেখানেই থাকুক না কেন ডাক দিলেই ফিরে আসে। দিনাজপুর অঞ্চলে এই পাখি খুব একটা দেখা যায় না। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার দুটি কালিম পাখি দিনাজপুরের জাতীয় উদ্যান রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানায় বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। অসাবধানতায় নেটের মধ্যে থাকা একটি পাখিকে ইতোমধ্যে শিয়াল খেয়ে ফেলে। বর্তমানে একাকী জীবন কাটাচ্ছে একটি কালিম পাখি। দর্শনার্থীসহ দূর-দূরান্তের পর্যটকদের পদভারে মুখরিত ঐতিহাসিক রামসাগরে এসে এই পাখিটি দেখতে ভুলছেন না কেউ। কালিম পাখি খুব দুঃসাহসী ও লড়াকু স্বভাবের। কালিম পাখির ঠোঁট ও মাথার ঝুটি লালচে কমলা বা লাল বা লালচে বেগুনি হয়ে থাকে। গায়ের পালক নীলচে বেগুনি রঙের হয়। লেজ কার্পাস তুলোর মতো সাদা। চোখের পাশে বৃত্তাকারে সাদাটে ছোপ। এই পাখির পা দুটি লম্বা। বন্য কালিম পাখির খাদ্য তালিকায় রয়েছে, ছোট মাছ, ব্যাঙ, কীট-পতঙ্গ, শামুক, লতা-গুল্ম, কচি পাতা, ধান, শস্যদানা, নলখাগড়ার কচি ডগা ও নরম ঘাস। কচুরিপানা বা অন্য কোনো শাকপাতাও খায়। কালিম পাখির বৈজ্ঞানিক নাম : Porphyrio porphyrio । এই পাখি Rallidae (রেলিডি) পরিবার গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। কালিম পাখির গড় ওজন ৭৭০ গ্রাম ও দৈর্ঘ্য ৫১ সে.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরা জলচর প্রাণী হলেও খাদ্যের বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া, তারা এক বিল থেকে অন্য বিলে স্থানান্তরিত হয় না। দিনাজপুর বন বিভাগের রামসাগর জাতীয় উদ্যানের দেখভালকারী বাবুল জানান, সুন্দরী এই ‘কালিম’ পাখিটি দেড় বছর আগে উদ্ধার করে এখানে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি একটিকে শিয়াল এসে খেয়ে ফেলেছে। বিরল প্রজাতির পাখিটিকে দেখতে এবং এর সম্পর্কে জানতে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর