শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিজেদের ইচ্ছামতো জন্মতারিখ বসানো যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখন থেকে নিজেদের ইচ্ছামতো জন্মতারিখ বসিয়ে সংশোধন করা যাবে না জন্মসনদ। জন্মনিবন্ধনের জন্মতারিখ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাবলিক পরীক্ষা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট হবে। এ বিষয়ে আর কোনো ধরনের ছাড় দেবে না সরকার। এ লক্ষ্যে জন্মসনদের মূল জন্মতারিখের পরিবর্তে পাবলিক পরীক্ষা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট অনুযায়ী জন্মতারিখ পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) থেকে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘জন্মতারিখ পরিবর্তন করার প্রবণতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এটা আর টলারেট করার পর্যায়ে নেই। এ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন থেকে আইন অনুযায়ী জন্মসনদের জন্মতারিখই চূড়ান্ত। এটি কোনোভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। এই জন্মতারিখ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাসপোর্ট ও অন্যান্য সনদ হবে।’

রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১৩) অনুসরণে বাংলাদেশের নাগরিকদের দেশে বা বিদেশে অবস্থানরত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা হয়। এ আইন এবং এ আইনের অধীন প্রণীত বিধিতে শিশুর জন্মের পরপর এবং ব্যক্তির মৃত্যুর পরপর মৃত্যুর খবর রেজিস্ট্রারকে দেওয়া ও নিবন্ধন করানোর তাগিদ রয়েছে। শিশুর ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদে লিখিত তারিখ তার প্রথম ও আদি জন্মতারিখ এবং এ তারিখের ভিত্তিতেই তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি হয়ে থাকে। কিন্তু পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে পাবলিক পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, পাসপোর্ট করার সময় জন্মনিবন্ধন সনদে উল্লিখিত রেজিস্ট্রেশনকৃত তারিখের পরিবর্তে অন্য একটি জন্মতারিখ বসিয়ে পাবলিক পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন, পাবলিক পরীক্ষার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করা হয়। পরবর্তী সময়ে পাবলিক পরীক্ষার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের আদলে জন্মসনদ, বিশেষত জন্মতারিখ সংশোধন করে দেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করা হয়। নিবন্ধক অফিস এসব আবেদন গ্রহণ, আপলোড ও অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করে, যা সমীচীন নয়। কোনো নিবন্ধক অফিসে জন্মসনদের মূল জন্মতারিখ পরিবর্তন করে পাবলিক পরীক্ষা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট তৈরি করে জন্মতারিখ বা জন্মসাল পরিবর্তনের আবেদন যেন গ্রহণ, আপলোড ও অনুমোদনের জন্য পাঠানো না হয় সে ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছে।

রেজিস্ট্রার জেনারেল রাশেদুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনেকেই এনআইডি, পাসপোর্ট করার সময় বলে তার জন্মনিবন্ধন হয়নি। পাবলিক পরীক্ষার সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রেও অনেক সময় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জন্মতারিখ বসানো হয়। পরে আমাদের কাছে এসে বলে ছোট ভুল হয়েছে, সে অনুযায়ী ঠিক করে দেওয়ার অনুরোধ করে। সংশোধনের ক্ষেত্রে নাম ভুল হতে পারে বা টাইপিং মিসটেক হতে পারে। সেগুলো সংশোধন করে দেওয়া যেতে পারে। জন্মতারিখ নিয়েই মূলত আমাদের কনসার্ন। অনেকের জন্মসাল ১৯৮০ হলে এসে বলে ১৯৮৫ করে দেন। এগুলো হচ্ছে। এসব অনিয়ম রোধেই মূলত এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর