দিনাজপুরে ধানের জমিতে এবার লাভজনক, অর্থকরী মসলা ও ঔষধি গুণসমৃদ্ধ তেজপাতার বাগান করে সাড়া ফেলেছেন মো. রহমত আলী। ২০১৭ সালে ১ একর ২০ শতক জমিতে ৮০০ তেজপাতার চারা রোপণ করেন তিনি। গাছের বয়স দুই বছরের পর থেকে তেজপাতা সংগ্রহ এবং বিক্রি শুরু করেন। এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তেজপাতা বিক্রি করেছেন এবং তেমন কোনো খরচ ছাড়াই বছরে ১ লাখ টাকা আয় সম্ভব। বাগানে তেজপাতা বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে আয়ও। গাছের পাতা কমপক্ষে ৭০ বছর পর্যন্ত সংগ্রহ ও বিক্রি করা যাবে। ফুলবাড়ী উপজেলার আকিলাপাড়া গ্রামের রহমত আলী ২০০৯ সালে নৌ বাহিনীর পিটি অফিসার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর জীবনে বাড়িতে এসে ওই জমিতে বিভিন্ন ধরনের ধানের চাষ করতেন। জমিটি একটু উঁচু থাকায় ধান চাষ করে বেশি লাভ হতো না। ধান চাষ করে তখন পেতেন ২০ হাজার টাকা, এখন খরচ বাদ দিয়ে পাওয়া যায় ১ লাখ টাকা। তাই তিনি ধান চাষ বাদ দিয়ে তেজপাতার বাগান করেছেন। রহমত আলী জানান, ধান চাষে লাভ না হওয়া এবং লাভজনক ও দীর্ঘমেয়াদি আয়ের জন্য ২০১৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে তেজপাতার বাগান করার চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকে ওই জমিতে ৮০০ তেজপাতার চারা রোপণ করে বাগান গড়ে তোলেন। যতই গাছের বয়স বাড়বে ততই এই পাতা বেশি পাওয়া যাবে। দামও ভালো এবং সারা বছরই বিক্রি করা যায়। বর্ষার সময় গাছের পাতা বেশি বৃদ্ধি পায়। একটি গাছে ৫-৭ কেজি পাতা পাওয়া যায়। এক সময় এক গাছ থেকেই ১ হাজার টাকার পাতা বিক্রি করা যাবে। তিনি জানান, চারাগাছ রোপণের পর একটি পরিপূর্ণ গাছ দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে পাতা সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়। বছরে দুই থেকে তিনবার পাতা সংগ্রহ করা যায়। এক কেজি কাঁচা তেজপাতা ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় বাগান থেকেই। তিন বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা তার খরচ হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তেজপাতা বিক্রি করেছেন তিনি। আগামীতে আরও বেশি বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করেন। তেজপাতার বাগানের চারপাশে ৩৫০টি সুপারির গাছ লাগানো আছে। ভবিষ্যতে বাগান সম্প্রসারিত করে বাগানের চারদিকে রাস্তা করে তেজপাতার বাগানকে একটি পিকনিক স্পট বানানোর ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি। এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার জানান, লাভজনক ও অর্থকরী এ তেজপাতা চাষের সাফল্য কৃষকের মধ্যে এনে দিয়েছে নতুন প্রেরণা।
