রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

কিশোরকে শিকলে বেঁধে নির্মম নির্যাতন

নাটোর প্রতিনিধি

কিশোরকে শিকলে বেঁধে নির্মম নির্যাতন

নাটোরের গুরুদাসপুরে বাবার কাছে পাওনা টাকা আদায় করতে মো. শাওন ইসলাম (১৩) নামে এক কিশোরকে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের চলনালি গ্রামে। এ ঘটনায় শাওনের মা আরজিনা বেগম মুন্নাফ হোসেনকে অভিযুক্ত করে গুরুদাসপুর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে কেউ আটক হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা ২টার দিকে পুলিশের সহায়তায় নির্যাতনের শিকার কিশোরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীমা আফরোজ জানান, শাওনের বাম পায়ে ফুলা-জখমের চিহ্ন রয়েছে, তার চিকিৎসা চলছে। নির্যাতনের শিকার শাওনের বাবা কাবিল হোসেনের বাড়ি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গরামপুর গ্রামে। চলনালি গ্রামের মুন্নাফ হোসেনের পাঁচ বিঘা জমি চুক্তিতে লিজ নিয়ে সেখানে পেয়ারার বাগান করেছেন। শুক্রবার সকালে ওই বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করতে এলে শাওনকে ধরে মুন্নাফ তার বাড়িতে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাওন জানায়, মুন্নাফ ও তার ভাতিজারা জোর করে তাদের বাড়িতে নিয়ে বাম পায়ে শিকলে বেঁধে চড়থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারতে থাকে। সকাল ৭টা থেকে পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত (বেলা ২টা) বেঁধে রেখে থেমে থেমে নির্যাতন করা হয়। শাওনের মা আরজিনা বেগম জানান, বেলা ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে ছেলেকে উদ্ধারের জন্য মুন্নাফের বাড়িতে যান তিনি। কিন্তু ছেলেকে ছেড়ে না দিয়ে তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন মুন্নাফ ও তার ভাতিজারা। নিরুপায় হয়ে থানা পুলিশের আশ্রয় নেন তিনি। পরে বেলা ২টার দিকে পুলিশের সহায়তায় ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছেলেকে নির্যাতনকারীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি। শাওনের বাবা কাবিল হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনাটি অমানবিক। মুন্নাফের কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা বছর চুক্তিতে পাঁচ বিঘা জমি পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়েছিলাম। দুই বছর ফলন বিপর্যয়ের কারণে এক বছরের টাকা পরিশোধে বিলম্ব হয়েছে। বকেয়া টাকা পেতেই ছেলেকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি। নির্যাতনের ঘটনাটি অস্বীকর করে মুন্নাফ হোসেন বলেন, জমি লিজের টাকা পরিশোধ না করে টালবাহানা করছেন কাবিল হোসেন। শুক্রবার সকালে বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করতে এলে তার ছেলেকে আটকে রাখা হয়েছিল। তবে নির্যাতন করা হয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর