শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

হত্যা মামলায় থানার ওসি, এসআইসহ নয়জন আসামি

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরের মনিরামপুরে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী, শ্বশুরসহ নয়জনকে আসামি করে পিটিশন মামলা হয়েছে যশোর আদালতে। আসামিদের মধ্যে জেলার মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান ও উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুজ্জামান রয়েছেন।

এজাহার থেকে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনায় মনিরামপুর থানায় হত্যার অভিযোগ করা হলেও আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা রেকর্ড করা হয়। এ জন্য আসামিদের সহযোগী হিসেবে এ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা বসু অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২১ মার্চ আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নিহত নাওয়াল জামান বরিষার স্বামী মনিরামপুর উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের আরশীল কবীর, তার বাবা আজমত হোসেন, মা আসমা বেগম, একই গ্রামের মৃত আবদুস সামাদের ছেলে মনিরুল ইসলাম, মনিরুলের স্ত্রী শিল্পী বেগম, এনায়েত মোল্লার স্ত্রী হাসিনা বেগম ও উজ্জ্বল আহম্মেদের স্ত্রী ইরানী ফারজানা। মামলার বাদী নিহত বরিষার বাবা যশোর সদর উপজেলার ভায়না গ্রামের মাহমুদুজ্জামান এজাহারে উল্লেখ করেন, প্রেমের ফাঁদে ফেলে কবীর তার মেয়ে বরিষাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বরিষাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। মোবাইল ফোনে বরিষা বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের বিষয়টি তাদের জানাতেন। এদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৩টায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাদীর পরিবারকে জানায়, বরিষা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদীর পরিবার লাশের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়। গলায় ফাঁস নেওয়ার কোনো দাগ ছিল না। এ ব্যাপারে বরিষার মা নওশাবা তানবীন মনিরামপুর থানায় মেয়েকে হত্যার অভিযোগ করেন। যার তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই আতিকুজ্জামান। সুষ্ঠু তদন্ত না করে অভিযোগটি আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলা হিসেবে অ্যান্ট্রি করেন থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এসআই আতিকুজ্জামান। বর্তমানে সব আসামি ময়নাতদন্তের রিপোর্টকে হত্যার পরিবর্তে আত্মহত্যায় রূপান্তরের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মনিরামপুর থানার এসআই শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর মেয়ের মা যেভাবে অভিযোগ দিয়েছিলেন সেভাবেই মামলা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্তকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। সব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তারা হত্যা মামলা দিলে আমরা সেটি নিতাম। আমরা অপমৃত্যু মামলাও তো করিনি। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা হয়েছে। এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্টে যদি হত্যার বিষয়টি উঠে আসে, তাহলে আগের মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। এটাই আইনি প্রক্রিয়া। মেয়ের পরিবার হয়তো অন্য কারও প্ররোচনায় এ ধরনের কাজ করছে’।

সর্বশেষ খবর