বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

৩০০ বছরের পুরনো মসজিদ ধ্বংস হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

৩০০ বছরের পুরনো মসজিদ ধ্বংস হচ্ছে

তিন গম্বুজবিশিষ্ট মোগল আমলের নারী মসজিদ। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এ মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মোগল ভাবধারার আছে সুস্পষ্ট ছাপও। এই নারী মসজিদটি অন্য সব মসজিদের মতো ইট-বালুর তৈরি হলেও স্থানীয়রা এ মসজিদকে ভিন্নভাবে  চেনেন। এ মসজিদের প্রবেশপথের মূল দরজায় ফারসি ভাষায় পাথরে আছে রোহমর্ষক বর্ণনা। মূলত নারীরাই এ মসজিদে নামাজ পড়তেন। তাই নারী মসজিদ নামেই পরিচিত। রাজশাহী শহর থেকে ৪৯ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে বাঘা উপজেলা সদরে শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলার (রহ.) ছেলে শাহ আবদুল হামিদ দানিশমন্দ (রহ.)-এর মাজারসংলগ্ন এ মসজিদটি। মসজিদটি দেখতে বছরজুড়ে এখানে আসেন পর্যটক ও দর্শনার্থী। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মসজিদটি এখন ধ্বংসপ্রায়। পর্যটকদের আকর্ষণ ধরে রাখতে ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটি সংরক্ষণের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদের অবস্থান প্রায় ৩০ ফুট সুউচ্চ টিলার ওপর। বর্গাকার মসজিদটির দৈর্ঘ্য ২৭ ফুট, প্রস্থ ১৩ ফুট। চারপাশের দেয়াল ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি চওড়া। উত্তর ও দক্ষিণে লম্বাকৃতির মসজিদের পুব দিকে আছে খিলানাকৃতির প্রবেশপথ। মসজিদের ইট ধূসর বর্ণের। দর্শনার্থী ও নামাজিদের ওঠানামার জন্য পুব দিকে আছে প্রবেশপথ। ঐতিহাসিক তথ্যমতে প্রায় ৫০০ বছর আগে পাঁচ সঙ্গীসহ সুদূর বাগদাদ থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য বাঘায় এসেছিলেন শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলা (রহ.)। তিনি বসবাস শুরু করেন পদ্মা নদীর কাছে কসবে বাঘা নামক স্থানে। শাহদৌলা (রহ.) আধ্যাত্মিক শক্তির বলে এ এলাকার মানুষের মধ্যে ইসলাম প্রচারে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেন। সরকারি তদারকির অভাবে নষ্ট হতে চলেছে ৩০০ বছরের পুরনো মোগল আমলের এ নারী মসজিদটি। নান্দনিক নকশা ও সুনিপুণ নির্মাণকার্যে শুধুই অযত্ন আর অবহেলার ছাপ। মসজিদের দেয়ালের কিছু কিছু অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। অযত্ন-অবহেলায় ঐতিহ্য ও গর্বের এ মসজিদ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। তবে বর্তমানে এ মসজিদে আর নামাজ আদায় হয় না। ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা মনে করেন, প্রাচীন এ মসজিদের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও ভাঙন রোধ দরকার। মোগল স্থাপত্য রীতিতে তৈরি নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম ওই মসজিদটি পুনরায় সংস্কার করে চালুর দাবি এলাকাবাসীর। বাঘা মসজিদের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের বগুড়া বিভাগীয় পরিচালক ডা. নাহিদ সুলতানা বলেন, ‘আমরা আমাদের সচিবসহ গত সপ্তাহে ভিজিট করেছি। এ বাজেটে যে কাজগুলো সেটা দুই বছর আগে নির্ধারিত। এ বছর কাজ করতে পারছি না। এখানে সংস্কারের কিছু নেই। এটা রাসায়নিক পরিচর্যা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর