মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

সক্রিয় আওয়ামী লীগ, পিছিয়ে নেই বিএনপি

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর

সক্রিয় আওয়ামী লীগ, পিছিয়ে নেই বিএনপি

আগামী সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় শরীয়তপুরের তিনটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বর্তমানে জেলার তিনটি সংসদীয় আসনই আওয়ামী লীগের দখলে। আগামী নির্বাচনেও সব কটি আসনই পেতে চায় দলটি। আর আসন উদ্ধার করতে চায় বিএনপি। অন্যদিকে একক নির্বাচন করতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, তিনটি আসনই ধরে রাখতে কাজ করছে জেলা আওয়ামী লীগ। সে অনুযায়ী জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বিএনপি বলছে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণ তাদের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা দল ও এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারা দলীয় প্রার্থী হতে পারেন এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যেও নানা আলোচনা চলছে। কিছু প্রার্থী এলাকায় অনুপস্থিত থাকলেও নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। বিরোধী দল বিএনপি ও অন্য দু-একটি রাজনৈতিক দলের এখনো এ নির্বাচন ঘিরে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি আসনেই দলগুলোর প্রার্থীর ছড়াছড়ি রয়েছে।

শরীয়তপুর-১ (পালং ও জাজিরা) : এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য  ইকবাল হোসেন অপু। আগামী নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক সম্ভাবনাময় মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি গত দুই মেয়াদে এ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে জয়লাভ করেন। এ ছাড়া শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাজিরা উপজেলা চেয়ারম্যান মোবারক আলী শিকদার, পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালসহ অনেকের নামই মনোননপ্রত্যাশী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে, এ আসনে বিএনপির তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। সংগঠন হিসেবেও এখানে দলটি তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। তাই এখানে বিএনপির কোনো প্রার্থী মুখ খুলে প্রার্থিতার দাবি করেন না। তবে এ দলের প্রার্থী হিসেবে দলীয়ভাবে যাদের কথা শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন কালু ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক হাজী  মিন্টু সওদাগর। শরীয়তপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মাতব্বরকেও প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির তেমন কোনো অবস্থান না থাকলেও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে।

শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও সখীপুর) : শরীয়তপুরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। আগামী নির্বাচনে স্বাভাবিকভাবেই তিনি শক্তিশালী প্রার্থী। এ ছাড়া আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য  মো. খালেদ শওকত, নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম ইসমাইল হক ও ব্যবসায়ী মো. মালেক আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে। এ আসনে বিএনপির তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এ আসন থেকে চারজন মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। গত সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে বিএনপি থেকে চারজন মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবারও বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ, দলীয় কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জামাল শরীফ হিরু, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) এস এম ফয়সাল ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান বাচ্চু সরকার। 

এ আসনে জাতীয় পার্টির সক্রিয় অবস্থান না থাকলেও জেলা জাতীয় পার্টির নেতা আবদুল হান্নান মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

শরীয়তপুর- ৩ (ডামুড্যা, গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ একাংশ) : নাহিম রাজ্জাক এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সম্ভাবনাময় প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আরও আছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবিদুর রহমান খোকা শিকদার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী। বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মিয়া নূর উদ্দিন অপু ও শরীয়তপুর জেলা বিএনপির  সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাঈদ আহমেদ আসলাম।

 

সর্বশেষ খবর