গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১২০ জন নারী তৈরি করছেন টাকমাথার জন্য পরচুলা। যা লেবানন, পাকিস্তান, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। স্থানীয় যুবক ইসরাফিল শেখ পরচুলা তৈরির কারখানা ‘হেয়ার ওয়েভিং’ গড়েন ২০১৮ সালে। চার বছরেই সাফল্য পেয়ে গোবিন্দগঞ্জে এখন তার কারখানার সংখ্যা তিনটি।
কারখানার ম্যানেজার মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ইসরাফিল শেখ ঢাকায় একটি পরচুলা তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। পরে নিজে ঢাকা থেকে দুজন কারিগর এনে স্থানীয় নারীদের প্রশিক্ষণ দেন। যারা সাত দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারেন। এভাবে একে একে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ঠাকুরবাড়ি রোড, ফুটানী বাজার ও শ্রীমুখ এলাকায় তিনটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যেখানে পরচুলা তৈরির কাজ করছেন ১২০ জন নারী কর্মী। বিদেশ থেকে কাজের অর্ডার পাওয়ার পর সে অনুযায়ী পরচুলা তৈরি করা হয়। গৃহিণী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে কাজ করেন। সরকারি সহায়তা পেলে এখানে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে।
প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার ইরিন আখতার জানান, একটি পরচুলা তৈরি করতে কারিগরদের তিন থেকে চার দিন সময় লাগে। একজন কারিগর মাসে ছয়-সাতটি পরচুলা তৈরি করে মাসে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। নারীরা সামান্য প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারেন বলে বিদেশের বাজারে এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। কারখানার কালার মাস্টার ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামাল দিয়ে এই পরচুলাগুলো তৈরি করা হয় বিভিন্ন ধাপে। অর্ডার অনুযায়ী পরচুলা তৈরি করতে হয় মান বজায় রেখে। নতুবা বিদেশিরা পণ্য গ্রহণ করে না। শতভাগ রপ্তানিমুখী এই পরচুলার প্রধান বাজার ভারত ও লেবানন। এ ছাড়াও পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যসহ আরও কয়েকটি দেশে পরচুলা রপ্তানি করা হয়।গাইবান্ধা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রবীন চন্দ্র রায় বলেন, এটি প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। কুটির শিল্প হলেও এটি সম্পূর্ণ রপ্তানিমুখী হওয়ায় এর বিস্তার হলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে।