রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

মাঠে খালেক আউয়াল, অস্বস্তিতে মঞ্জু সমর্থকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

মাঠে খালেক আউয়াল, অস্বস্তিতে মঞ্জু সমর্থকরা

তালুকদার খালেক

খুলনা সিটি নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে আগামী সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত রাখতে চাইছেন দলের নেতারা। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

একইভাবে পরিকল্পিত ও আধুনিক খুলনা গড়ার লক্ষ্যে সিটি নির্বাচনে হাতপাখা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরা। ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করছেন দলের মেয়র প্রার্থী। তবে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ বিষয়ে এখনো কেন্দ্রের গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন মঞ্জু সমর্থকরা। তারা বলছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও চাপ আরও জোরদার করা যাবে।

জানা যায় খুলনা সিটিতে ভোটপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রায় সমান গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের কেসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে তালুকদার আবদুল খালেককে হারিয়ে বিএনপির মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মণি ১ লাখ ৮১ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। বর্তমান সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক নগরবাসীকে আসন্ন সিটি করপোরেশন ও সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দেশের উন্নয়নের রূপকার ও ছিন্নমূল মানুষের ভরসার স্থল হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পর্যাপ্ত সহায়তা দিয়ে তিনি সবার মনে জায়গা করে নিয়েছেন। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া সড়ক-ড্রেনেজ সংস্কার, বর্জ্য থেকে সার, ডিজেল ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো শেষ হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নগরীর পরিবেশগত উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সাবেক নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন দুটোতেই বিএনপির থাকা উচিত। তবে দল নির্বাচনে না গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হব না। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার ও নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছে। ঠিক তার আগ মুহূর্তে পাঁচ সিটির নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য এ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচন করতে পারত। আর নতুন করে তাদের ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন নতুন প্রাণশক্তি পেত ও এর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ব্যাপক জনমত গঠন করে সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন এবং আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করে বেকায়দায় ফেলা যেত। সেক্ষেত্রে সিটি নির্বাচনই হতে পারে সরকার পতন আন্দোলনের নতুন মাইল ফলক। জানা যায়, সিটি নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণে গ্রিন সিগন্যাল না থাকায় দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও অস্বস্তিতে রয়েছেন মঞ্জু সমর্থকরা। দলীয় কোন্দলে কোণঠাসা মঞ্জু সমর্থকরা নির্বাচনের মাধ্যমে দলে মূল নেতৃত্বে ফিরতে চাইছেন। তবে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিএনপি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। বিএনপির সঙ্গে বেইমানি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বিএনপির প্রকাশ্য প্রার্থী হতে চাই, দল নির্বাচনে গেলে প্রার্থী হব। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ২৮ এপ্রিল ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত সিটি মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আবদুল আউয়াল। ওয়ার্ড সভাপতি ডা. আয়নাল মোল্লার সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নগর সহসভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান এজেন্ট শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী নগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু গালিব, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ইমরান হোসেন মিয়া। বক্তারা ১২ জুন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাতপাখা মার্কায় ভোট দিয়ে আধুনিক খুলনা গড়ার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর