বুধবার, ৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
আদালতে মিতুর বাবা

বাবুল একাধিকবার খুনের চেষ্টা করেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

সাবেক এসপি বাবুল আকতার কয়েকবার স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুনের চেষ্টা করেন। এ জন্য তার সোর্স কামরুল সিকদার ওরফে মুসা সিকদারের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও করেন। গতকাল তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দীনের আদালতে সাক্ষ্যদানকালে এসব কথা বলেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন। সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে আংশিক জেরা করেন। পরে আদালত জেরা মুলতবি ঘোষণা করে ৮ মে মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। চট্টগ্রাম মহানগর পিপি আবদুর রশিদ বলেন, ‘মঙ্গলবার মোশারফ হোসেনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে আংশিক জেরা করেন। আগামী ৮ মে মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, সাক্ষ্যদানকালে মোশাররফ হোসেন আদালতকে বলেন, বাবুলের সঙ্গে এক নারীর সম্পর্ক রয়েছে বিষয়টি জানার পর থেকে মিতুর ওপর অত্যাচার বৃদ্ধি পায়। এ জন্য মিতুকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। খুন করতে মুসাকে কাজে লাগান বাবুল।

মুছার সঙ্গে বারবার বৈঠক করে খুনের পরিকল্পনা করেন। একাধিকবার খুনের চেষ্টাও করেন। অস্ত্র কেনার জন্য বাবুল মুসাকে ৭০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন।

 ঘটনার আগে বাবুল চীনে যান। তখনো মুসাকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন মাহমুদাকে খুন করতে। এর আগে কড়া নিরাপত্তায় বাবুলকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় তার দুই সন্তানও আসে। তারা বাবুলের সঙ্গে কথা বলে। এর আগে পিবিআইর দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত বিদেশি নাগরিক এক নারীর সঙ্গে বাবুলের পরকীয়া সম্পর্ক হয়। এর জেরে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। পরে বাবুল স্ত্রীকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। ৩ লাখ টাকায় ‘খুনি’ ভাড়া করে স্ত্রীকে খুন করান। নিজেকে আড়ালে রাখতে প্রচার করেন- জঙ্গিরাই মিতুকে খুন করেছে। মিতুকে খুনের মিশনে নেতৃত্ব দিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুলের ‘সোর্স’ মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা। সঙ্গে ছিল আরও ছয়জন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআইর তদন্তে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আকতারের সংশ্লিষ্টতা পায়। এরপর ঘুরে যায় আলোচিত এ মামলার তদন্ত। অতঃপর গ্রেফতার করা হয় বাবুল আকতারকে। ওই মামলায় বাবুল বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এ মামলার ২ হাজার ৮৪ পৃষ্টার অভিযোগপত্র প্রদান করে পিবিআই। যাতে বাবুল আকতারসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। গত ১৩ মার্চ আদালত চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

সর্বশেষ খবর