শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশকে পাইলট প্রকল্পের আওতায়  রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মিয়ানমারের পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুস। গতকাল জেনেভা থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

টম অ্যান্ড্রুস বলেন, বাংলাদেশ ‘বিভ্রান্তিমূলক’ এবং ‘বলপ্রয়োগের’ মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে বাধ্য করছে। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি  রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক নয়। সিনিয়র জেনারেল মিন হং হ্লায়েং রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি এখন নিষ্ঠুর এক সামরিক শাসনযন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও অন্যান্য  মৌলিক অধিকারকে প্রত্যাখ্যান করে চলেছেন। জাতিসংঘের এই দূতের মতে, প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ১৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমারে  ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ আরও ছয় হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর কথা। যারা এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে, তাদের  গ্রেফতারের হুমকি, কাগজপত্র জব্দ ও নানা ধরনের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পাইলট প্রকল্পের আওতায় রোহিঙ্গাদের নিজেদের গ্রামে ফিরতে  দেওয়া হবে না। শরণার্থীদের মংডুর অভ্যর্থনা ও অন্তর্বর্তীকালীন শিবিরে রাখা হবে। এরপর তাদের নতুন করে তৈরি ১৫টি গ্রামে নেওয়া হবে।  রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যাওয়ার পর অবাধে চলাফেরা করতে দেওয়া হবে না। এই পরিস্থিতিতে  রোহিঙ্গারা ফিরে গেলে আন্তর্জাতিক আইনে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতার লঙ্ঘন হবে।

কারণ রাখাইনে ফিরে গেলে রোহিঙ্গারা ব্যাপকতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে নৃশংস অপরাধের শিকারে পরিণত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে আমি অনতিবিলম্বে এই  রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প স্থগিত করার অনুরোধ করছি। পাশাপাশি আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কথায় ও কাজে রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। বাংলাদেশে আশ্রিত  রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তাদানের ব্যর্থতার চক্র থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বের হয়ে আসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন জাতিসংঘের দূত।

সর্বশেষ খবর