শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নারী ও তরুণ ভোটাররা হতে পারেন ফ্যাক্টর

খুলনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক নারী। আর নতুন ভোটার প্রায় ৪২ হাজার। যারা এবার পাল্টে দিতে পারেন ভোটের হিসাব-নিকাশ। তাই প্রার্থীরাও প্রচারণার সময় বিশেষ নজর দিচ্ছেন তাদের দিকে।

নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরি, পিছিয়ে পড়া নারীর প্রশিক্ষণসহ নানা উদ্যোগের কথা বলছেন তারা। আর নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে মাদকমুক্ত সমাজ ও কর্মসংস্থানসহ দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তফসিল অনুযায়ী, আজ (শনিবার) মধ্য রাতে শেষ হচ্ছে খুলনা সিটি নির্বাচনের প্রচারণা। প্রচারণায় এবার খুব বেশি সময় না পাওয়ায় শুরু থেকেই ক্লান্তিহীন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটেছেন প্রার্থীরা। জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে এবার মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩। এবারই প্রথম ভোট দেবেন ৪২ হাজার ৪১৬ তরুণ ভোটার। নারী ভোটারের সঙ্গে এই নতুনরাও প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণে ফ্যাক্টর হতে পারেন। পাল্টে দিতে পারেন ভোটের হিসাব-নিকাশ। প্রার্র্থীদের নিয়েও নারী ও তরুণ ভোটারদের ভাবনার শেষ নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজ, যোগ্যতা-অযোগ্যতা কিংবা দলীয় প্রতীক নাকি খুলনার প্রায় ৩ লাখ নারী ও নতুন ভোটার জয়-পরাজয়ে ভূমিকা রাখবেন- এমন আলোচনা চলছে সর্বত্র।

তরুণ প্রজন্মের মূল চাওয়া মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত খুলনা। দূষণমুক্ত যানজটমুক্ত সবুজ নগর। তাছাড়া বর্তমান সমাজে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হয়েছে। যিনি নতুন মেয়র হবেন, তাকে এসব নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে হবে।

তরুণ প্রজন্মের ভোটার রবিউল ইসলাম বলেন, সৎ, যোগ্য ও আদর্শবান যিনি জনগণের উন্নয়নে কাজ করবেন, মাদক নির্মূলে কাজ করবেন এমন মেয়র প্রার্থীকে ভোট দেব। নারী ভোটাররা বলছেন, যিনি নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগগুলো আমাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন, এমন মেয়রকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চাই।

এদিকে নারীদের জন্য নারীবান্ধব পরিবেশ, অগ্রাধিকারভিত্তিক উন্নয়নমূলক নানা কর্মসূচির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, সিটি করপোরেশনে নারীদের বিষয়টি সবসময় রয়ে গেছে উপেক্ষিত। নির্বাচিত হলে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব, বাসাবাড়িতে কুটির শিল্পের ব্যবস্থা করতে পারি। তারা খেলনা বানাবেন বা পাটজাত পণ্য বানাবেন। সেই সঙ্গে তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান, মাদকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলব। নির্বাচনে হকার ও বস্তিবাসীর ভোটও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা কাকে ভোট দেবেন, এ নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিগত দিনে সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে তাদের একটা অংশের ভোট তালুকদার আবদুল খালেকের দিকে যেতে পারে। আবার এ সময়ে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় শহরজুড়ে মাদক মাথাচাড়া দিয়েছে। যা নিয়েও ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। এদিকে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল বলেন, নারীদের নিরাপত্তা নেই। তারা পাড়ামহল্লায় ইভটিজিংয়ের শিকার, কর্মসংস্থান নেই। মাদকে নিমজ্জিত তরুণ সমাজ। নির্বাচিত হলে নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করব। তরুণদের জন্য মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের চেষ্টা করব। অন্যদিকে বর্তমান সরকার নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, নারী ও তরুণরা যেন জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, দেশের জন্য জাতির জন্য কাজ করতে পারে। সে জন্য যা যা করণীয় সব কিছুই করা হবে।

সর্বশেষ খবর