পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। তারা বলছে, আগুন লাগানোর পরে সিনিয়র নেতাদের ভিডিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে লন্ডন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন নেতাদের কথাও বলেছে।
গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান এসব কথা বলেন। সাংবাদিকরা জানতে চান, লন্ডন থেকে নেতা-কর্মীদের কাছে বাসে অগ্নিসংযোগের কোনো নির্দেশনা আসছে কি না?
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, বিচারক ও আইনজীবীদের ভয় দেখানোর জন্য আদালতে ককটেল হামলা করা হয়েছে। গত সোমবার বিএনপি মহাসচিবের জামিন আবেদনের শুনানি ছিলে। সেখানেও নাশকতাকারীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য বিচারকদের ভয় দেখানোর জন্য চারতলা থেকে ককটেল নিক্ষেপ করেছে। যদিও এ ঘটনায় কোনো হতাহত হয়নি। এ সময় তিনি জানান, কারা এসব কাজ করেছে আমরা সবার নাম পেয়েছি। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। বাসে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে ডিবি প্রধান জানান, গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তারা বাসে আগুন দেন। এরপর বাসে অগ্নিসংযোগের ভিডিও লন্ডনে পাঠানো হতো। রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মিরপুর সুপার লিংক লিমিটেড বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ। এ সময় তিনি বলেন, বাসে অগ্নিসংযোগকারী তানভীর ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক, দেলোয়ার হোসেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ও ফারুক হোসেন বিএনপির সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতার তানভীর সেদিন বাসটিতে আগুন দেয়। পরে তিনি নিজের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে আগুন লাগানোর কথা জানান তার এক বন্ধুর কাছে। কথোপকথনে তানভীর লিখেছেন, আগুন লাগিয়ে কী হবে? আমরা আগুন লাগাচ্ছি আর লন্ডনে যারা আছেন তারা ভালো আছেন। উল্টো আগুন দিতে গিয়ে আমরা ধরা পড়ছি। তাদের মধ্যে এমন কথোপকথন হয়েছে। তাকে যখন ডিবিতে নিয়ে আসা হলো, তখন তিনি স্বীকার করেছেন যে, এটি তিনি লিখেছেন। ডিবির কাছে তানভীর বলেছেন, আমরা আগুন লাগাচ্ছি ও ককটেল নিক্ষেপ করছি। কিন্তু জেলে গেলে আমাদের দেখার কেউ নেই। যারা নির্দেশ দিচ্ছেন তারা কোথাও লুকিয়ে আছেন অথবা বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি আরও জানান, তানভীরকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অনেকের নাম ও নম্বর পেয়েছি। তানভীরের সঙ্গে আর কারা কারা ছিল এসব বিষয় জানা যাবে। মাঠপর্যায়ে কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া থাকে যে, আগুন লাগানোর পর দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের ছবি-ভিডিও দেখাতে হবে। আগুন দেওয়ার সময় মুখে মাস্ক ও রুমাল ব্যবহার করতে হবে। যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন দিতে হবে। এরপর আগুন লাগিয়ে টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ককটেল কিনে এনে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। আবার কোথাও পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হচ্ছে।
