সোমবার, ১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিশেষ অভিযানেও কাটছে না শঙ্কা

♦ ১২ দিনে গ্রেফতার ২১৫ জন, মামলা ১৮৪টি ♦ নভেম্বর-ডিসেম্বরে ২২১টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেফতার ৪৩৮

সাখাওয়াত কাওসার

বিশেষ অভিযানেও কাটছে না শঙ্কা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে গুলি, হামলা এবং নাশকতার ঘটনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের একটি উপজেলায় বিএনপি নেতাকে গুলি এবং কুপিয়ে হত্যাসহ এক রাতে তিনজনকে খুন করার মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে টাঙ্গাইল-৫ সদর আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী-সমর্থকদের ওপর গুলি চালানো  হয়। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ অভিযানের মধ্যে দেশি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এমন হানাহানির ঘটনা ঘটলেও সে অর্থে হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের অনেকেই চলমান বিশেষ অভিযানকে অন্য সময়ের মতো নিয়মিত অভিযান বলে আখ্যা দিয়েছেন। জানা গেছে, গত ২০ দিনে সারা দেশে শতাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৮ শতাধিক। এর মধ্যে ছিল অন্তত ৪৫টি গুলির ঘটনা। চলমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত করছে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে দেশে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু হয়। ১৮ থেকে ২৯ ডিসেম্বর এ ১২ দিনে সারা দেশে গ্রেফতার করা হয়েছে ২১৫ জনকে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৮৪টি। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ২২১টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪৩৮ জন। পুলিশ সদর দফতরের উপ-মহাপরিদর্শক (অপারেশন্স) আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখার স্বার্থে অভিযান অব্যাহত থাকবে। ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, অবৈধ অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিভিন্ন থানার ওসিরা জানিয়েছেন, বিশেষ অভিযানের নির্দেশনা গত ৯ ডিসেম্বর তারা পেয়েছেন। এরপর থেকে বিভিন্ন মাদক মামলার আসামি, নাশকতা মামলার আসামি, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে নাশকতা ঠেকানো এবং তফসিল-পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তারা নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর থেকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। বিশেষ অভিযান চালিয়ে এরই মধ্যে অনেক অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ অনেক অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কক্সবাজারের এসপি মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, বিশেষ নির্দেশনা পেয়ে তারা অভিযান জোরদার করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বিশেষ অভিযানের মধ্যে গুলি : গত ২৬ ডিসেম্বর পাবনায় আওয়ামী লীগের একটি ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তার আগের দিন টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি চালানো হয়। ২৪ ডিসেম্বর সীতাকুন্ডে বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই দিন মাদারীপুরে এসকেন্দার খাঁ নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মুন্সীগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এভাবে বলা চলে প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও গুলির ঘটনা ঘটছে। এতে এখন পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর