আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের মুখে শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও শিল্প পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। গতকাল সকাল ১০টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে অবস্থিত এসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। শিল্প পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সকালে স্বাভাবিক নিয়মে কারখানায় যায় শ্রমিকরা। কিন্তু কাজ না করে বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ শুরু করলে কর্তৃপক্ষ একের পর এক কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। পরে শ্রমিকরা বেরিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখা কারখানাগুলোর সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া কারখানাগুলোতেও ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার ছোট-বড় অন্তত ৯৭টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরে শ্রমিকরা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিলে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা। শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে হা-মীম, শারমীনসহ অন্তত ৯৭টি কারখানার কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শ্রমিকরা উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পরে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেন। শ্রমিকরা এখনো সড়কে রয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত কয়েকদিন ধরে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে সমানুপাতিক হারে নারী ও পুরুষ শ্রমিক নিয়োগসহ নানা দাবিতে সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এদিকে, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে কারখানার স্টাফ, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর, র্যাবের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টাসহ ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
টঙ্গীতে ১৩ দফা দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ : গাজীপুরের টঙ্গী ন্যাশনাল টিউব রোড এলাকায় অ্যামট্রানেট গ্রুপের মা টাওয়ার, আলম টাওয়ার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করে। গতকাল সকালে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রেখে কারখানার ফটকে অবস্থান নেন। একপর্যায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অপরদিকে টঙ্গী গাজীপুরা সাতাইশ বাগানবাড়ী এলাকায় প্রিন্স নামের একটি পোশাক কারখানার বিভিন্ন দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করে শ্রমিকরা। এ ছাড়া টঙ্গী বাটা কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ বিষয়ে অ্যামট্রানেট কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন সুজন বলেন, শ্রমিকরা অহেতুক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। এমন দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) মো. ওসমান আলী বলেন, বিভিন্ন দাবি নিয়ে কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
► ছয় ঘণ্টার বৈঠক, আজ খোলা সব কারখানা