ভারতের সঙ্গে সব চুক্তি উন্মোচন, অসম ও পরিবেশবিরোধী সব চুক্তি বাতিল করাসহ ৬ দফা দাবি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে সংবিধান সংস্কার কমিটিকে আজ মঙ্গলবার দেওয়া হবে ৫৯ দফা প্রস্তাবনা এবং চলতি মাসেই দেশের সব জেলার থানা ও উপজেলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির তালিকা ঘোষণা করা হবে। গতকাল রাজধানীর বাংলামোটরে নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। নাগরিক কমিটির ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বহমান নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার নিশ্চিত করতে হবে; দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে; গত ১৫ বছরে হিন্দু-বৌদ্ধসহ সব সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও ভূমি দখলের বিচার নিশ্চিত করতে হবে; পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য স্পষ্ট ভূমিকা নিতে হবে এবং অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, এসব দাবিতে ডিসেম্বর মাসজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় নাগরিক কমিটি। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সংবিধান সংস্কার কমিটিকে ৫৯ দফা প্রস্তাবনা দেওয়া হবে জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সংবিধান সংস্কার কমিটির কাছে আমরা এসব প্রস্তাবনা জমা দেব। গত ৫ আগস্ট গণরায়ের মাধ্যমে বর্তমান সংবিধান বাতিল হয়ে গেছে। এই সংবিধান আমরা এখন মানি না। ভবিষ্যতেও মানব না। কারণ এই সংবিধান ফ্যাসিবাদের সংবিধান। এই সংবিধান গত ১৫ বছরের গুম-খুনের জন্য দায়ী। জুলাই-আগস্টে যে দুই হাজার ব্যক্তি শহীদ হয়েছেন, তাদের বিচারে বর্তমান সংবিধান বিভিন্ন জায়গায় বাধাগ্রস্ত করছে। বর্তমান সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে জন-আকাঙ্ক্ষার একটি সংবিধান আমরা চাই।’
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, এই হামলার অর্থ দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে ভারতের রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বাংলাদেশের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো উসকানির ফাঁদে আমরা পা দেব না। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বহু জাতির এই দেশে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বাস করছি। আমাদের এই সম্প্রীতির বাংলাদেশ রক্ষায় সবাইকে শান্ত ও ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে।’
কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, চলতি মাসেই বাংলাদেশের সব জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃত করার লক্ষ্যে সব কটি জেলার থানা ও উপজেলায় কমিটি ঘোষণা করবে জাতীয় নাগরিক কমিটি।