চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মচারী আবদুল গাফ্ফারকে ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। গতকাল সকালে উপজেলার উথলী রেলস্টেশনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বিক্ষোভে নিহত গাফ্ফারের ১১ মাস বয়সি সন্তানকে নিয়ে তার স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার, বাবা জিন্নাত আলী, মা তহমিনা খাতুনসহ হাজারো নারী-পুরুষ অংশ নেন।
কর্মসূচি চলাকালে খুলনা থেকে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেন উথলী স্টেশনে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীরা প্রায় আধা ঘণ্টা ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেন। স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে কর্মসূচিটি হয়। এতে স্থানীয় জামায়াত নেতা মাওলানা মো. মহিউদ্দিন, বিএনপি নেতা ফয়সাল মাহাতাব প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বলেন, গাফ্ফার প্রতিবাদী মানুষ। গত ২১ মে বিকালে তিনি চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে উথলীর উদ্দেশে কপোতাক্ষ ট্রেনে ওঠেন। ওই দিন ট্রেনের টিটিই, অ্যাটেনডেন্ট ও জিআরপি পুলিশ যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছিলেন। গাফ্ফার প্রতিবাদ করলে তাকে জোর করে পাশের বগিতে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অন্য যাত্রীরা কারণ জানতে চাইলে তারা গাফ্ফারকে ছিনতাইকারী বলে পরিচয় দেন ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান। কয়েক মিনিটের মাথায় জয়রামপুর স্টেশন এলাকায় তাকে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। সহযাত্রীরা বাড়িতে এসে ঘটনার বর্ণনা দিলে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গাফ্ফারের বাবা ট্রেনের টিটিই লালন চক্রবর্তী, অ্যাটেনডেন্ট মিলন ও সোহাগ মিয়া এবং জিআরপি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পারভেজ ও কনস্টেবল কাদেরের নাম উল্লেখ করে ২৭ মে জীবননগর আমলি আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) দায়িত্ব দেন।
জীবননগর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, গাফ্ফার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার পাশাপাশি জেলা প্রশাসক ও রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। মামলা নিয়ে গড়িমসি করলে এলাকাবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।