মাদারীপুরের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং নামের এক যুবক এখন বাংলাদেশে। বিয়ে করে বর্তমানে তিনি মাদারীপুরে শ্বশুরবাড়িতে আছেন। এদিকে ভিনদেশি নাগরিককে একনজর দেখতে ওই বাড়িতে ভিড় করছে লোকজন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচরের বাসিন্দা সাইদুল হোসেন ও ইয়াসমিন বেগমের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তিন বোনের মধ্যে সুমাইয়া বড়।
এদিকে চীনের সাংহাই শহরের বাসিন্দা শি তিয়ান জিং (২৬)। সাংহাই শহরে তার রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। প্রথমে সুমাইয়া এই শি তিয়ান জিংয়ের টিকটক দেখেন। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে তাদের কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়েই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান-প্রদান করেন। একপর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইল ফোনে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে আশপাশসহ দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশে আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে ওঠার সময় বলেছে আমি বাংলাদেশে আসছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করেনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি। ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। ওরাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন। এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। ও এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এরই মধ্যে আমার সব কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে।’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে, তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি।’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘শি তিয়ান জিং খুবই ভালো। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। এতে করে আমরা খুব খুশি।’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রুবেল হাওলাদার বলেন, ‘কয়েক দিন আগে চীন থেকে এক ছেলে এখানে এসেছেন। তার সঙ্গে আমাদের এলাকার সুমাইয়ার প্রথমে কোর্টের মাধ্যমে পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়।’