তিস্তার পানি ওঠানামা করতে থাকায় নদীপাড়ের মানুষ এখনো আতঙ্কে রয়েছে। এদিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে পাঁচটি সড়ক তলিয়ে গেছে। একই সঙ্গে পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
লালমনিরহাট : হঠাৎ পানি আসে আবার কমে যায়, পানির এই বাড়া-কমা নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষের। চলতি মাসে তিস্তার পানি দুবার বিপৎসীমা অতিক্রম করে। দুই দফা বন্যায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এখনো প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। কখন তিস্তার পানি ঘরে ঢুকে বাড়িঘর প্লাবিত করে- এ আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের মানুষের।
১৫ দিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই রাতে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে এবং দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে কমছে। পানি ওঠানামার ফলে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে এবং প্রতিনিয়ত ওঠানামা করছে। গত রবিবার সন্ধ্যায় ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। পরদিন সোমবার সকাল ৬টা, ৯টা, দুপুর ১২টা, বেলা ৩টা এবং সন্ধ্যা ৬টায় পানি যথাক্রমে বিপৎসীমার ৫, ৯, ১৫, ১৫ এবং ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। আবার মঙ্গলবার একই সময়গুলোতে পানি বিপৎসীমার ২১, ২০, ২১, ২০ এবং ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা, ৯টা, দুপুর ১২টা এবং বেলা ৩টায় পানি যথাক্রমে ১১, ১২, ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এভাবে প্রতিদিন পানি ওঠানামার কারণে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ কমছে না; বরং দিন দিন বাড়ছে।
রাঙামাটি : রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পৌর শহরসহ বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার অন্তত আড়াই হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। এ ছাড়া পাঁচটি সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে গতকাল ভোর থেকেই পানি বাড়তে শুরু করে। সকাল ১০টার দিকে উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া, মুসলিম ব্লক, হাজীপাড়া, এফ ব্লক, মাধ্যমপাড়া ও কলেজপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়।
পানি উঠেছে এসব এলাকার অনেক বাড়িঘরে। এ ছাড়া পানিতে উপজেলা সদর-বাবুপাড়া, সদর-মাস্টারপাড়া, বটতলী-উগলছড়ি, উপজেলা সদর-করেঙ্গাতলী ও উপজেলা সদর-দূরছড়ি সড়কের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে ওইসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার বলেন, ‘পানি এখনো বাড়ছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আসেননি। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বিকালে আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ আসতে পারে।’