সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান, তার পরিবার এবং স্বার্থ-সংশ্লিষ্টদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ১৯১ হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে গত ৯ মার্চ ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের দেওয়া অবরুদ্ধের আদেশ বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল আরেফিন স্বপন।
গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি ফারুক খানের ভাই সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান এবং তার পরিবার ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্টদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ১৯১ হিসাব অবরুদ্ধ করতে গত ৬ মার্চ আবেদন করে দুদক। আবেদনে বলা হয়, সামিট গ্রুপ এবং তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের’ অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তাদের নামে সঞ্চয়ী, এফডিআর ও অন্য হিসাবগুলোর তথ্য পাওয়া যায়। এসব হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে, যা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক। যে কোনো সময় এ অর্থ উত্তোলন করে বিদেশে পাচার বা গোপন করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ১৯১টি ব্যাংক হিসাবে জমা ৪১ কোটি ৭৪ লাখ ৭৬০ টাকা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন বলে দুদক মনে করে।
এই আবেদনে শুনানির পর গত ৯ মার্চ ১৯১ হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। এ আদেশের বিরুদ্ধে বিকল্প প্রতিকার নেই উল্লেখ করে অবরুদ্ধের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট করেন সামিট গ্রুপের এ এস এম নাজমুল হায়দারসহ ১৫ জন।
দুদকের আইনজীবী মো. মাহমুদুল আরেফিন স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, বিকল্প আইনি প্রতিকার নেই উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রিট আবেদনটি করা হয়েছিল। আমি বলেছি, ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন আবেদন করার সুযোগ আছে। তখন হাই কোর্ট রিট আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে খারিজ করে দেন। এ আদেশের ফলে ১৯১টি ব্যাংক হিসাবে জমা ৪১ কোটি ৭৪ লাখ ৭৬০ টাকা অবরুদ্ধই থাকবে।