বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাজধানীর কুড়িলে পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবিতে দলটির পল্টন মোড় অবরোধে গতকাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল রাজধানী ঢাকা। পোশাক শ্রমিকদের চার ঘণ্টা ধরে চলা অবরোধে শুধু কুড়িল এলাকা নয়, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল ছিল বেশ ধীরগতির। এরপর শ্রমিকরা সড়ক ছাড়লেও সৃষ্ট যানজট স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে।
সরেজমিন গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায়ও রাজধানীর কুড়িলে প্রগতি সরণিতে যানবাহনগুলো খুবই ধীরগতিতে চলতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, গতকাল দুপুর ১২টায় কুড়িলে ইউরোজোন ফ্যাশন নামের পোশাক কারখানার প্রায় ৫০০ কর্মী বেতন-ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং সড়ক ছেড়ে দিতে তাদের অনুরোধ জানানো হয়। বিকাল ৪টায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল শুরু হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল দুপুরে কুড়িলে প্রগতি সরণির উভয় পাশ অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে দুই লেনেই যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অবরোধে সড়কে গাড়ির জট লেগে যায়। এতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হয় সংশ্লিষ্টদের। কুড়িলে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের প্রভাব পড়ে ঢাকার অন্যান্য সড়কেও। এতে বাড্ডা, রামপুরা, গুলশান, মহাখালী ও আশপাশের সড়কে তৈরি হয় তীব্র যানজট। ভোগান্তিতে পড়েন অফিস-কর্মস্থলগামী সাধারণ যাত্রীরা।
এর আগে দুপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের পরই গুলশান ট্রাফিক বিভাগ এ বিষয়ে নগরবাসীকে ভোগান্তি সম্পর্কে অবগত করে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। ফেসবুকে এক পোস্টে গুলশান ট্রাফিক বিভাগ জানায়, কুড়িলে ইউরোজোন ফ্যাশন গার্মেন্টসের প্রায় ৫০০ কর্মী বেতন-ভাতার দাবিতে ইনকামিং ও আউটগোয়িং রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে কুড়িল থেকে বাড্ডার দিকে ও বাড্ডা থেকে কুড়িলের দিকে কোনো গাড়ি যাচ্ছে না। এদিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল বিকালে পল্টন মোড় অবরোধ করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় আশপাশের সড়কগুলোতে, যার পরিধি পূর্বে মতিঝিল, দক্ষিণে জিরো পয়েন্ট, উত্তরে কাকরাইল এবং পশ্চিমে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে।