সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি হঠাৎ অস্বাভাবিক গতিতে বাড়তে শুরু করেছে। ফলে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। সে সঙ্গে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আবাদি জমির ফসল তলিয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট ও নীলফামারীতে পানি কমে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে রবিবার থেকে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি কাজিপুর পয়েন্টে ৭৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৯৪ সেন্টিমিটার এবং সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় ৬৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও ভোর ৬টার পর থেকে প্রতি ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। আর সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, আসামে গত দুই দিন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে অস্বাভাবিক গতিতে পানি বাড়ছে। আরও দুই-এক দিন বাড়বে তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না এবং বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। আর এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
লালমনিরহাট : উজানের ঢল ও তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এক রাতের ব্যবধানে পানি কমে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। প্লাবিত লোকালয় থেকে পানি অনেকটাই নেমে গেছে। বন্যার্ত মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার। তিনি পাঁচটি উপজেলায় ঘুরে ঘুরে বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।
অন্যদিকে সদর উপজেলার রাজপুর ও খুলিয়াগাছ এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
রংপুর : বৃষ্টিপাত আর উজানের পাহাড়ি ঢলে রবি ও সোমবার তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল। তবে ২৪ ঘণ্টা না যেতেই তিস্তার পানি কমেছে। ফলে নদীপাড়ের মানুষের মাঝে স্বস্তি এসেছে। গতকাল সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। একই সঙ্গে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
নীলফামারী : উত্তরের নীলফামারীতে গতকাল সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি জলকপাট (৪৪) খুলে রাখা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে।