আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে গুম-অপহরণ, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ পরোয়ানার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর ১২টি দপ্তরে। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এক প্রসিকিউটর জানান, গত বুধবার বিকালেই ৩০ আসামির বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও সংশ্লিষ্ট ১২টি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
অন্য দপ্তরগুলো হলো- চিফ অব আর্মি স্টাফ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস), আর্মি হেড কোয়ার্টার্সের অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পার্সোনেল সার্ভিসেস ডিরেক্টরেটের পরিচালক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্মি সিকিউরিটিজ ইউনিটের কমান্ড্যান্ট, প্রভোস্ট মার্শাল ও আর্মি এমপি ইউনিট ফর ইনফরমেশনের সিও। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিককে।
এ ছাড়া আসামিদের মধ্যে আছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক। আগামী ২২ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে এ সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম দুই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন। এর মধ্যে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলায় আসামি ১৭ জন। আর জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) বন্দি রেখে নির্যাতনের মামলায় ১৩ জন আসামি। এ দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী আসামিরা (যারা দায়িত্বে বহাল আছেন) কোনো পদে নেই বলে গণ্য হবে।