আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু তাকে এই সুন্দর পৃথিবীতে আনতে যার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, তার যত্নটা কতখানি নেয়া হয়? আমরা কি আসলেই জানি গর্ভাবস্থায় মার কেমন যত্ন নেয়া হলে শিশু থাকবে সুস্থ সবল এবং হবে মানসিকভাবে পূর্ণ বিকশিত? আসুন বিষয়টা নিয়ে কিছু জানা যাক।
খাদ্য ও ব্যায়াম :
প্রথম তিন মাসে শিশুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গঠন হয়। মাকে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। মদ, সিগারেট খেলে সন্তান হতে পারে বিকলাঙ্গ। আঁশ জাতীয় খাবার, মাছ-মাংস, ফলমূল ও শাক সবজি খেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে প্রস্রাব- পায়খানা ঠিক মত হচ্ছে কিনা। হালকা ব্যায়াম করতে হবে কিন্তু ভারি কাজ করা যাবে না। ঝুঁকে বা নুয়ে কাজ না করা উচিত। হাঁটা চলায় সাবধান হতে হবে। এগুলো আমরা সবাই জানি কিন্তু ঠিক মত পালন করি না। কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সচেতন থাকতেই হবে। কারণ আজকের শিশু নয়, আজকের সুস্থ শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
চিকিৎসা:
গর্ভবতী মা এর রক্ত পরীক্ষা করতে হবে , ডেলিভারির আগে রক্ত ব্যবস্থা করতে হবে । রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করার পাশাপাশি কিছু পরীক্ষা করতে হবে যা বাচ্চার জন্মগত কোন রোগ হওয়ার আশংকা বাতিল করবে । TORCHES TEST করা জরুরী । সিফিলিস যে জন্মগত ভাবে হতে পারে জানেন না অনেকেই । জার্মান মিজলস হলেও সন্তানের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সমস্যা হতে পারে। এইডস ও জন্মগত হতে পারে । গর্ভবতী মাকে ধনুষ্টঙ্কার এর টিকা দিতে হবে। ANTENATAL অন্ততপক্ষে ১৩ টি ভিজিট করতে হবে বাচ্চার শারীরিক অবস্থা ও মায়ের অবস্থা জানার জন্যে । বাচ্চার মাথা আর শরীরের গঠন দেখে ডাক্তার থেকে নিশ্চিত হতে হবে সিজার অথবা নরমাল, কোনটা ভালো অপশন হবে ।
গর্ভাবস্থায় কয়েকটি বিপদ চিহ্ন:
রক্তপাত, মাথা ব্যথা / চোখে ঝাপসা দেখা, ঘণ্টায় ৪ বারের বেশি পেত মোচড় দেয়া, জ্বর, বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া ও বমি হওয়া।
এইগুলোর যে কোন একটা থাকলেও তৎক্ষণাৎ ডাক্তার এর দারস্থ হতে হবে।
মানসিক প্রশান্তি:
সুস্থ পরিবেশ ই শুধু একটা সুস্থ বাচ্চার জন্ম দিতে পারে । এ সময় ধর্মীয় বই পুস্তক পাঠ করলে, সুন্দর সন্তানের স্বপ্ন দেখলে বাস্তবেও সুন্দর, সুস্থ বাচ্চার জন্ম দেয়া সম্ভব। এটা বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভাবেও প্রমানিত যে মায়ের সাথে সন্তানের আত্তিক সম্পর্ক থাকে। কাজেই মাকে আনন্দে থাকতে হবে, পরিবারকেও মাকে সাপোর্ট দিতে হবে।
পরিশেষে একটা কথা না বললেই নয়, মা সন্তানের প্রথম বিদ্যালয়, প্রথম শিক্ষক এবং প্রথম কাছের মানুষ। তাই সন্তানকে সুস্থ রাখতে মাকেও নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
তথ্যসুত্র: সাজগোজ
বিডি-প্রতিদিন/১৮ মে ২০১৫/ এস আহমেদ