আমাদের বাঙালিদের একটু মিষ্টিমুখ না হলে দিন যেন ভালো কাটেই না। আর আমাদের কাছে মিষ্টিমুখ মানেই হচ্ছে অতিরিক্ত চিনিসমৃদ্ধ নানা খাবার গ্রহণ। তবে চিনি যে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো নয় তা কিন্তু আমরা ভালোই জানি। বাড়তি ওজন শরীরে যোগ হওয়া, দাঁতের ক্ষতি করা, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনি ক্ষতিকর ইত্যাদি আমাদের সবারই জানা। কিন্তু জানেন কি, চিনির এর চেয়েও মারাত্মক ক্ষতিকর কিছু দিক রয়েছে? শুধু তাই নয়, চিনির এই মারাত্মক ক্ষতিকর দিকগুলো মানবশরীরে খুবই খারাপ প্রভাব ফেলে। নিচে চিনির ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :
ক্যান্সার সৃষ্টিতে দায়ী : অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে প্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় চিনি।
চিনিতে বাড়ে ওজন : অতিরিক্ত চিনি আমাদের ক্ষুধার উদ্রেক করে যা সহজে পূরণ হতে চায় না। আর একারণেই ক্ষুধা মেটাতে যাওয়া দেহে যোগ করে বাড়তি ওজন।
শেখার ক্ষমতা নষ্ট করে : প্রায় ১ মিলিয়ন শিশুর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে, অন্যান্য শিশুদের তুলনায় যারা চিনিসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেয়ে থাকে তারা প্রায় ৪১% কম নম্বর পায় পরীক্ষায়। এরপর গবেষণায় দেখা যায় চিনির ক্ষতিকর প্রভাব মস্তিষ্কে পড়ার ফলে শেখার ক্ষমতা লোপ পেতে থাকে।
লিভার ড্যামেজের জন্য দায়ী : চিনি খুব সহজে হজম হতে চায় না। আর একারণে অনেকটা সময় ধরেই এটি দেহে থাকে যা দূর করতে লিভারকে বেশি কাজ করতে হয়। আর অতিরিক্ত কাজের কারণে লিভার তার স্বাভাবিকতা হারায়। এতে করে ধীরে ধীরে লিভারের কর্মক্ষমতা লোপ পেতে থাকে।
অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া : অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমিয়ে দেয়। যার ফলে দেহের চামড়া ঝুলে যাওয়া, চামড়া কুঁচকে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
দাঁতের ক্ষয় : অনেকের ধারণা চকলেট দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু মূলত চকলেট নয়, চকলেটে থাকা চিনি দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী।
ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় চিনি : হুট করেই দেহের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় চিনি। প্রতিবার এই কাজটির কারণে দেহে ইনসুলিন হরমোনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে এবং এই হরমোনটির স্বাভাবিক উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। আর একারণেই চিনি ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
অপুষ্টি বাড়ায় চিনি : চিনি দেহের জন্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদান শোষণে বাঁধা প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে শিশু দেহে এই জিনিসটি বেশি নজরে পড়ে, যার কারণে অপুষ্টিজনিত সমস্যায় পড়তে দেখা যায় অনেককে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৪ জুন ২০১৫/শরীফ