ছুরি, কাঁচি, কাঁটা, ফরসেপ, ট্রে ছাড়াই এবার হবে বাইপাস সার্জারি! অপারেশন থিয়েটারের বাইরে আর উত্তেজনায় প্রহর গুণতে হবে না। আত্মীয়-পরিজনদের বুকে আর কাটাছেঁড়া করতে হবে না। বিনা রক্তপাতে হয়ে যাবে বাইপাস সার্জারি, তাও প্রায় চোখের পলকেই।
আর সেই বাইপাসটা নিঃশব্দে যে করবে, তার নাম 'এজিজিএফ-ওয়ান'। আদ্যোপান্ত 'জিরো জিরো সেভেন'-এর ঢঙে অপারেশন চালানো সেই 'জেমস বন্ড' আদতে একটা প্রোটিন। এই প্রটিন শরীরে নতুন নতুন তরতাজা ধমনী জন্মাতে সাহায্য করে। অকেজো ধমনীগুলোকে বাতিল করে দেয়। বিবর্তনের স্বাভাবিক নিয়মেই অকেজো ধমনীগুলো ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
কোনও কল্পকাহিনী নয়। সাড়াজাগানো ওই আবিষ্কারের খবরটি ছাপা হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল 'প্লস বায়োলজি'র ১১ অাগস্ট সংখ্যায়। মূল গবেষকদের মধ্যে রয়েছেন এক বাঙালি। আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের জীববিজ্ঞানী সংযুক্তা রায়বর্মণ। 'অ্যাঞ্জিওজেনিক ফ্যাক্টর এজিজিএফ-ওয়ান অ্যাক্টিভেটস অটোফ্যাগি উইথ অ্যান এসেন্সিয়াল রোল ইন থেরাপিউটিক অ্যাঞ্জিওজেনেসিস ফর হার্ট ডিজিজ' শীর্ষক ওই গবেষণাপত্রে চিনের হুয়াঝঙ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যার অধ্যাপক শিং কেনেথ ওয়াং লিখেছেন, ''আমরা ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে দেখেছি, ওই প্রোটিন তাদের হৃদরোগ কমিয়ে দিচ্ছে, সারিয়ে দিচ্ছে।''
কিন্তু কীভাবে এটা সম্ভব? গবেষকরা বলছেন, যে প্রক্রিয়ায় শরীরে নতুন নতুন তরতাজা ধমনী বা শিরার জন্ম হয়, এই প্রোটিন সেই প্রক্রিয়ার গতি বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি ধমনীর যে কোষ, কলাগুলো নষ্ট বা দুর্বল হয়ে গেছে কিংবা যে কোষ, কলাগুলো আর না থাকলেও চলে, এই প্রোটিন সেই কোষগুলোকে অকার্যকর করে দেয়। ধমনীর মূল স্রোতের কাজকর্ম থেকে সেই কোষ, কলাগুলোকে সরিয়ে দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ