জীবনযাত্রায় অতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। সেই সঙ্গে বেড়েছে খাওয়ায় অনিয়ম। আর এ অনিয়মের সঙ্গে আপনার সঙ্গী হয়েছে গ্যাস্ট্রিক-আলসারের মতো কিছু রোগ। বর্তমান সময়ে পেটের যে রোগটিতে বেশিরভাগ মানুষ ভুগে থাকেন তা হল আলসার। পেটের ভিতর ক্ষত বা ঘা হওয়াকে আলসার বলা হয়ে থাকে। আলসারকে সাধারণ রোগ ভাবার কোন সুযোগ নেই। শুরুতে সঠিক চিকিৎসা নিলে আলসার সহজে ভাল হয়ে যায়, অন্যথায় মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আলসার হয়ে উঠতে পারে জীবনঘাতি।
১। বুক জ্বালাপোড়া
আলসারের প্রথম এবং শুরুর লক্ষণ হল বুক জ্বালাপোড়া করা। মশলাদার খাবার বা তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার পর বুক ও পেটের সংযোগস্থলে জ্বালাপোড়া করে। তার সাথে সাথে টক ঢেঁকুর আসা। এটি আলসারের প্রথম ও প্রাথমিক লক্ষণ।
২। অস্বাভাবিক পেট ব্যথা
নাভির ডান বা বাম পাশে অল্প একটু জায়গায় চিন চিন ব্যথা অনুভূত হওয়া। অনেক সময় পেটের কোথাও ব্যথা অনুভূত না হয়ে বুকের মাঝখানে চাপ চাপ ব্যথা হওয়া এবং অস্বস্তি বোধ করা। আবার অনেক সময় এই ব্যথা পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্সের ফলে এই ব্যথা হয়ে থাকে। কখন কখনও এই রকম পেটে ব্যথার কারণে রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকতে পারে রোগী।
৩। রক্তবমি
অনেক সময় আলসারের রোগীর রক্তবমি হতে পারে। তবে বমির সাথে টাটকা রক্ত বের হবে না। বমি ও রক্ত মিশে খয়েরি রংয়ের বমি হতে পারে। যদি এমন হয় তবে বুঝতে হবে আলসার অনেক মারাত্নক পর্যায়ে চলে গেছে। অতিসত্বর চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৪। পেট ফাঁপা ও বায়ু ত্যাগ
কোন কিছু না খেয়েই পেট ভরা মনে হবে। পেটের গ্যাসের কারণে পেট ভরা মনে হয়ে থাকে। খাবারের পর পর বা যেকোন সময় অস্বস্তির সাথে পেট ফাঁপা অনুভূত হবে। কিছুক্ষণ পর পর বায়ু ত্যাগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫। খাবারের অরুচি
আলসারের রোগীর খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যায়। খাবারে অরুচি দেখা দেয়। পরিমাণমত খাবার না খাওয়ায় শরীর হয়ে পড়ে দুর্বল। এর কারণে রক্ত স্বল্পতা, গা ম্যাজ ম্যাজ করা, অল্প কাজে ক্লান্ত বোধ করার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৬। ওজন কমে যাওয়া
খাবার কম খাওয়ায় দিন দিন রোগীর ওজন কমতে থাকতে। হজমের গোলমালের কারণে এই সমস্যাটা হয়ে থাকে।
৭। কালো পায়খানা
আলসার যখন মারাত্নক আকার ধারণ করে তখন পেটের ভিতর রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর ঘন, আঠালো এবং কালচে রংয়ের পায়খানা হতে পারে। এইরকম লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার