আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'বিএনপি এখন যদিও বা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের বাহানা করছে, কিন্তু সুযোগ পেলেই আবার নাশকতা করবে, জনগণকে ছোবল মারবে। তাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।'
তিনি বলেন, 'বিএনপি জানে নির্বাচনে তাদের কোন সম্ভাবনা নেই, তাই তারা অনেক ষড়যন্ত্র এঁকেছে। নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা করার ষড়যন্ত্র করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। আমরা রাজপথে নেমেছি, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকব। কাউকে দেশে বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করবে।'
শনিবার বিকালে বন্দরনগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদের সঞ্চালনায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী বলেন, 'দিয়াশলাইয়ের কাঠিতে যেমন খোঁচা দিলে জ্বলে ওঠে তেমনি আমাদের নেতাকর্মীদের একটা গুণ হলো খোঁচা দিলে তারা জ্বলে ওঠে। বিএনপি আমাদের খোঁচা দিয়েছে, আমরা জ্বলে উঠেছি, রাজপথে নেমেছি। আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনা ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আর ঘরে ফিরে যাবে না।'
অতীতের উদাহরণ দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, 'তারা ঘোষণা দিয়েছিল গত ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় করে দেবে, ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ করবে, ১০ তারিখের পর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নাকি দেশ চলবে। তারা যাতে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ করতে পারে সেজন্য আমরা বললাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না গেলেও বাণিজ্য মেলার মাঠ কিংবা বিশ্ব ইজতেমার মাঠে যান। তারা বলল, নয়াপল্টনের অফিসের সামনেই সমাবেশ করবেন। শেষ পর্যন্ত গরুর হাটের মাঠে সমাবেশ করলো। আর তাদের অফিসে পাওয়া গেল তাজা বোমা, দুই লাখ পানির বোতল, কয়েক টন চাল। তার মানে, তাদের পরিকল্পনা ছিল ঢাকা শহরে বোমাবাজি করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।'
তিনি বলেন, 'এরপর বিএনপি দিল হাঁটা কর্মসূচি, পদযাত্রা। মানুষ বলে, বিএনপির মনে হয় দম ফুরিয়ে গেছে। দুর্মুখেরা এও বলছে, যে বিএনপি ভবিষ্যতে হামাগুঁড়ি দেওয়া শুরু করবে। এখন তারা সমগ্র বাংলাদেশে ৮টি জায়গায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।'
'বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না' সাফ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, 'দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই, আছে শুধু একমাত্র পাকিস্তানে। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে অনুকরণ করে না, পাকিস্তান এখন বাংলাদেশকে অনুকরণ করে। সংসদীয় গণতান্ত্রিক সকল দেশে যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও নির্বাচনকালীন জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকবেন, তার সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। আর নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।'
সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য আলহ্বাজ নঈম উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, উপদেষ্টা আলহাজ্ব শফর আলী, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত