২ মে, ২০১৬ ১১:৩২

শুক্রাণু বিক্রি করে যুবরাজের আয় ৫০ লাখ রুপি!

অনলাইন ডেস্ক

শুক্রাণু বিক্রি করে যুবরাজের আয় ৫০ লাখ রুপি!

নামটা শুনলেই ভারতীয় দলের বিখ্যাত এক ক্রিকেটারের কথাই মনে আসে। কিন্তু না, এই যুবরাজ সেই নয়! উন্নত প্রজাতির এক দুর্লভ ষাঁড়, যার বীর্য বিক্রি করে মালিকের রোজগার বছরে ৪০-৫০ লক্ষ রুপি। কিছু দিন আগে ভারতের দিল্লিতে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত কৃষি উন্নতি মেলায় যুবরাজ নামের এই ষাঁড় সকলের দৃষ্টি কাড়ে। দিল্লির কৃষি মেলায় মুরাহ প্রজাতির অতি উন্নত মানের এই ষাঁড়কে দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কৃষক ও ডেয়ারি মালিকদের ভিড় ছিল দেখার মতো। ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার হৃষ্টপুষ্ট যুবরাজ নামের এই ষাঁড়টিকে দশ সদস্যের এক জুরি বোর্ড দেশের সেরা গবাদিপশুর স্বীকৃতি দিয়েছেন।

যুবরাজের বাজার দাম অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ৭ কোটি রুপি। সকলের তাই নানা প্রশ্ন। বড়লোক ডেয়ারি মালিকরা যুবরাজকে কিনতে চাইলে যুবরাজের ‘পালক পিতা’ করমবীর সিংয়ের একই উত্তর। ‘‘না, আমার যুবরাজ বিক্রয়যোগ্য নয়।” তবে হ্যাঁ, বিকল্প সমাধান নিশ্চয় আছে। সেটা হল, যুবরাজের ‘সিমেন’ বা বীর্যের সাহায্যে মুরাহ প্রজাতির গাভি ও স্ত্রী-মহিষকে কৃত্রিমভাবে নিষিক্ত করা যায়। আর তাতে বাচ্চা হলে সেই গাভি ও মহিষের গড় দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা বা পরিমাণ দাঁড়ায় কমপক্ষে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ লিটার। তাই যুবরাজের বীর্যের চাহিদা বিরাট। ওই ‘সিমেন’ বেচেই তো করমবীরের রোজগার এখন দৈনিক ৩০ হাজার রুপির মতো।

কিভাবে এই বীর্য সংগ্রহ করা হয় এবং কোন বৈজ্ঞনিক পদ্ধতিতে তার প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করা হয়, সেটা দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে করমবীরের কৃষি-ফার্মে, যা কিনা দিল্লির লাগোয়া রাজ্য হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র জেলার সুনারিরিও গ্রামে।
এই কৃত্রিম প্রজনন সম্পর্কে করমবীর জানান, ‘‘যুবরাজ দিনে সাড়ে তিন থেকে পাঁচ মিলিলিটার সিমেন দেয়। এই সিমেনের জন্য যুবরাজকে ইলেক্ট্রো-স্টিমিউলেশন পদ্ধতিতে উত্তেজিত করা হয়৷।এরপর নিসৃত সিমেনকে পাতলা করে ৫০০ থেকে ৬০০ ডোজ সলিউশন তৈরি করা হয়।” এমন প্রতি ডোজের বাজার দাম প্রায় হাজার ১২০০ রুপি। কিন্তু সমাজের উপকারের কথা ভেবে তিনি প্রতি ডোজের দাম রেখেছেন ৩০০ রুপি। মানে মাসে লাখ চারেক রুপি, যা বছরে দাঁড়ায় ৪০ থেকে ৫০ লাখের মতো।

তবে হ্যাঁ, আট বছর বয়সি যুবরাজের খোরাকি ও দেখভালের খরচও কম নয়। দৈনিক খরচ তিন হাজার রুপি। এছাড়া তাকে সুস্থ-সবল রাখতে নিয়মিত খাওয়ানো হয় অন্য পশু খাদ্যের সঙ্গে কয়েক কিলোগ্রাম আপেল এবং অন্যান্য ফলফলাদি।

মুরাহ প্রজাতির অতি উৎপাদনশীল এই ষাড় পাওয়া যায় প্রধানত মধ্য ও উত্তরভারতে। যুবরাজের প্রজাতির গবাদিপশুর সঙ্গে মিল রয়েছে জাফরাবাদী এবং নীলি রবি প্রজাতি গবাদি পশুর। যুবরাজের ‘পালক পিতা’ করমবীর জানান, তিনি তাঁর পুত্র সমান কামধেণু যুবরাজ ষাড়ের বাবার নামও ক্রিকেটার যুবরাজের বাবা-মার নামে রেখেছে। যোগরাজ সিং এবং গঙ্গা।

তা তাঁর প্রিয় ষাড়টির নাম যুবরাজ রাখার কারণ কী? ‘‘ক্রিকেটারদের মধ্যে যুবরাজ যেমন বলিষ্টতার এক উজ্জ্বল প্রেরণা, এই যুবরাজও তেমনি”, জানিয়েছেন যুবরাজের পালক পিতা।

সূত্র: কলকাতা টোয়েন্টিফোর ডট কম।

বিডি-প্রতিদিন/০২ মে, ২০১৬/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর