একজনের বয়স ২১, অন্যজনের ১৭। এক মায়ের গর্ভে তো নয়ই, এক পরিবারের সদস্যও তারা নয়। দেখাও হয়নি কখনো। কিন্তু যেদিন তারা প্রথম সামনাসামনি হলেন, ভেবেছিলেন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি! নাক, মুখ, চোখ, কান সব হুবহু এক। এমনকি চুলের রঙও।
অবিশ্বাস্য হলেও ২১ বছরের শ্যানন লোনারগান আর ১৭ বছরের সারা নর্ডস্ট্রমের ক্ষেত্রে এমনটিই ঘটেছে। তারা যমজ বোন নয়। কোনও রক্তের সম্পর্কও নেই। একজনের বাড়ি আয়ারল্যান্ডে। অন্যজনের সুইডেনে। কিন্তু দু'জনের এমন মিল, যা অনেক সময় জমজ বোনের ক্ষেত্রেও হয় না। সৃষ্টিকর্তা যেন একই ছাঁচে দুই মেয়েকে তৈরি করে দুটো আলাদা দেশে পৌঁছে দিয়েছেন।
এবার আসি দুই দেশের দুই অবিকল 'মূর্তির' সাক্ষাতের প্রসঙ্গে। তাদের মিলিয়ে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সেখানে অপরজনের ছবি দেখে দু'জনেই ভেবেছিলেন, নিজের ছবি। কেউ হয়ত ছবি নিয়ে ফেক আইডি খুলেছে। মেজাজও খারাপ হয়েছিল দু'জনেরই। কিন্তু যখন দেখলো এ ছবি তো তার পোস্ট করা না, এমনকি এমন জায়গায় ছবি তোলাও হয়নি, তখন লাগে খটকা! তার পর শুরু হয় খোঁজ। একে একে যোগাযোগ, পরিচয়। শেষে মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
পরিচয় আর যোগাযোগ হওয়ার পর সুইডেন থেকে বাবাকে নিয়ে সোজা আয়ারল্যান্ডে চলে আসে সারা। শ্যাননকে দেখে সারার বাবার চোখও কপালে উঠে যায়। ডারবিনে ওদের যখন প্রথমবার দেখা হয় তখন ওদের অনুভূতি কেমন ছিল সেটা বরং ওদের বয়ানেই শোনা যাক।
শ্যানন জানিয়েছেন, ‘‘দরজা খুলে সারাকে দেখে আমি যেন অসুস্থ হয়ে পড়ি। দম যেন বন্ধ হয়ে যায়।’’ আর সারার বক্তব্য, ‘‘বাড়ি থেকে রওনা হওয়ার সময় খুব এক্সাইটেড ছিলাম। কিন্তু শ্যাননের কাছাকাছি এসে বেশ নার্ভাস লাগছিল। তার পর ওকে দেখে মনে হল যেন আমাকেই দেখছি।’’
গল্পের শেষ এখানেই নয়। কয়েকটা দিন একসঙ্গে কাটানো, বড়দিনের কেনাকাটা, এ-সবের মাঝে ওরা আবিষ্কার করে ফেলেছে যে, শুধু নাক, মুখ, চোখ, চুলেই নয়, পছন্দ-অপছন্দ কিংবা স্বভাবেও ওরা একেবারে অভিন্ন।
সত্যিই অবাক কাণ্ড! কে জানে আপনারও কোনও হামশকল লুকিয়ে আছে এই পৃথিবীর কোনও কোণে!
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ/১৩