দিন দিন পৃথিবী থেকে কমছে পানীয় জলের পরিমাণ। পৃথিবীর তিনভাগ জুড়ে সমুদ্র হলেও নোনা পানি তো আর পান করা যায় না। তাই একমাত্র উপায় ওই নোনা পানিই শুদ্ধ পানীয় জলে রপান্তরিত করা। আর এই পদ্ধতিতেই আশার আলো দেখাচ্ছে চৈতন্য করমচেদু নামে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মার্কিন কিশোর। সমুদ্রের পানি থেকে বিশুদ্ধ পানীয় জল নিষ্কাশনের সহজ উপায় আবিষ্কার করে ফেলেছে এই খুদে গবেষক। আর তার এই পদ্ধতিতে খরচও অনেকটা কমেছে। উচ্চমাত্রার শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন পলিমার ব্যবহার করে সমুদ্রের পানিকে বিশুদ্ধ পানীয় জলে পরিণত করার উপায় খোঁজে পেয়েছে সে।
দ্য জেস্যুইট হাই স্কুলের ছাত্র চৈতন্য জানায়, সারা বিশ্বে আবহাওয়ার নানা পরিবর্তন নিয়ে সে চিন্তিত। স্কুলের গবেষণাগারেই কাজ শুরু করেছিল। এরপরেই বিভিন্ন প্রযুক্তিবিদ্যার সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সে কাজ দেখে নড়েচড়ে বসে। চৈতন্যসহ আরও আটজন মিলে এই কাজটি করেছে৷ উষ্ণায়ন পরবর্তী সময়ে পানীয় জল নিয়ে ভাবনাটাই এই মুহূর্তের সবচেয়ে জরুরি বিষয় বলেও মনে করে সে।
করমচেদু সাংবাদিকদের আরো বলে, পৃথিবীর ৭০ ভাগই পানি আর সেই পানির বেশিরভাগটাই সামুদ্রিক পানি। কিন্তু নোনা পানিকে পানীয় জলে পরিণত করা অত্যন্ত কঠিন। বিজ্ঞানীরাও বহু বছর ধরে এই নিয়ে কাজ করছেন। পানি থেকে নুনের পরিমাণ কমানো কিংবা সম্পূর্ণ দূর করা, এই নিয়ে চলছে গবেষণা। তবে সামুদ্রিক পানি কিন্তু লবণের দ্রবণে সম্পূর্ণ সম্পৃক্ত কোন দ্রবণ নয়। তাই একটি উচ্চমাত্রার শোষণক্ষমতা সম্পন্ন্ পলিমারের ব্যবহার করে খুব কম খরচে সমুদ্রের জলকে বিশুদ্ধ পানীয় জলে পরিণত করার উপায় বের করে ফেলেছে সে। এই পলিমারটি জলের পরিবর্তে নুনের সঙ্গে যুক্ত হয়। জেস্যুইট হাই স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষক লারা শামিহে বলেন, চৈতন্য সম্পূর্ণ অন্যভাবে বিষয়টি নিয়ে ভেবেছে।
সাধারণত, দশ শতাংশ পানি নুনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে। বাকি ৯০ শতাংশ কিন্তু নুনের সঙ্গে যুক্ত থাকে না। চৈতন্য এই ৯০ শতাংশের ওপরই গবেষণা করেছে। যেখানে বিজ্ঞানীদের বেশিরভাগই দশ শতাংশ নিয়ে চিন্তিত থাকেন৷ বিজ্ঞানীরা চৈতন্যের গবেষণা নিয়ে ইতিমধ্যে ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন। ইন্টেলের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান মেলায় ইণ্টারন্যাশনাল গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের দশ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এমআইটির টেক.কন সম্মেলনেও চৈতন্যের গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা করেছে। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার