আগুনের লেলিহান শিখা নিভিয়ে দিতে পারেনি জীবনের পথচলা। শরীরময় দগদগে দাগ দেখে আয়নায় নিজের শরীর শিউরে উঠলেও জীবনের নতুন দিশা খুঁজে পেয়েছেন ভারতের সাত নারী। সৌজন্যে রাইটার্স কাফে।
চেন্নাইয়ের জনপ্রিয় কফিশপ রাইটার্স কাফে চাকরি পেয়েছেন অগ্নিকাণ্ডে মারাত্মক পুড়ে যাওয়া ওই নারী। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরলেও দেহের বেশ কিছু অংশ পুড়ে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল তাদের। প্রকাশ্যে তাদের দেখে চমকে উঠত সকলে। বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই যখন কাম্য হয়ে উঠেছে, হতাশ সাত নারীকে আশার আলো দেখিয়েছেন এম মহাদেবন। চেন্নাইয়ে তার রেস্তোরাঁ রাইটার্স কাফেতে কর্মী হিসেবে অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে ফেরা ৭ নারীকে তিনি নিয়োগ করেন। কাজে যোগ দেওয়ার আগে তাদের তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রিভেনশন ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ক্রাইম প্রিভেনশন অ্যান্ড ভিক্টিম কেয়ার (পিসিভিসি) সংগঠনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রাইটার্স কাফের কর্ণধারের লক্ষ্য, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এই নারীদের জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা। ৬ মাস আগে পিসিভিসির দপ্তরে এমনই কয়েকজন নারীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই এমন সিদ্ধান্ত নেন মাধবন। রেস্তোরাঁর ইউনিট হেড তথা শ্যেফ করণ নানাভালনের দাবি, নারীশক্তির উন্মেষ ঘটাতেই এই পদক্ষেপ।
প্রতিদিন সকাল ৯টায় কাফের দরজা খোলে। ঝাঁপ ফেলতে রাত সাড়ে ১০টা বাজে। নিয়মিত গড়ে ১০০ খদ্দেরকে সামলাতে হয়। ব্যস্ত রেস্তোরাঁয় কাজ করতে কেমন লাগছে? প্রশ্নের জবাবে ঝলমলে মুখে বছর বিয়াল্লিশের মঞ্জুলা জানান, 'দারুণ অভিজ্ঞতা। আমরা সবাই অভিশপ্ত অতীত ভুলে নতুন পথে হাঁটছি। এত স্বাধীনতা কখনও পাইনি।'
উল্লেখ্য, রাইটার্স কাফে কোনও লাভজনক সংস্থা নয়। রেস্তোরাঁর লভ্যাংশ অগ্নিকাণ্ডের শিকার অন্যান্য নারীদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যয় করা হয়। করণ জানিয়েছেন, 'দীর্ঘ যাত্রাপথের এ সবে শুরু। আপাতত অগ্নিকাণ্ডের শিকার আরও ৪ নারী তালিম নিচ্ছেন। শুধুমাত্র রান্না নয়, পরিবেশনার কাজেও তাদের নিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।' সূত্র: এই সময়
বিডি-প্রতিদিন/০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব