অবুঝ কিশোর। তা না হলে সামান্য পিৎজা না পেয়ে কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়! যদিও শেষ পর্যন্ত তাকে থামানো গেছে। তবে আগেই এলাকার সব মানুষ, পুলিশ ও দমকল বাহিনীকে হাজির করে মহাকাণ্ড বাধিয়ে ফেলে সে।
গত শুক্রবার ভারতের আসামের শিলচরে অঙ্কিত পাল নামের ১৩ বছরের এক 'পিৎজা আসক্ত' কিশোর এমন কাণ্ড ঘটায়।
তবে অঙ্কিত পালের বাড়ি শিলচরে নয়, আসামেরই নগাঁও জেলার যমুনামুখে। সেখানকার সেন্ট্রাল স্কুলে পড়তো। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর আর স্কুলের প্রতি তার মনোযোগ ছিল না। তাই বাবা-মা পড়াশোনার জন্য তাকে শিলচরে পিসির বাড়িতে পাঠায়। ঘটনার একদিন আগে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার অঙ্কিতকে শিলচরে নিয়ে আসা হয়। লিঙ্ক রোডে পিসির বাড়ি। রাতে হঠাৎ পিৎজা খাওয়ার বায়না ধরে সে। পিসি বা পিসেমশায় তাতে একদমই গুরুত্ব দেননি।
বিষয়টা নিয়ে শুক্রবার সকালে মায়ের সঙ্গে পিসির বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় ফোনে। সেই সময় অঙ্কিত ফোন টেনে কিছু একটা বলতে চেয়েছিল মাকে। তার পিসি জলিদেবী সে সুযোগ দেননি। এরপর ছাদে উঠে পাইপ বেয়ে জানালার কার্নিশে নেমে গিয়ে দাঁড়ায় অঙ্কিত। প্রথমে বিষয়টি পথচারীদের দু-একজনের নজরে পড়ে। দেখতে দেখতে নীচে ভিড় জমে যায়। এরই রেশে শহর জুড়ে যানজট মাত্রা ছাড়ায়। নড়িস না বাবা, অনেক পিৎজা দেব'- বলতে বলতে গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল সবার। এমনকি কার্নিশে দাঁড়িয়েই শত শত পিৎজার 'অফার' পাচ্ছিল অঙ্কিত। কেউ কেউ দোকান থেকে পিৎজা কিনেও নিয়ে আসে। তবু নামতে রাজি হয়নি। তার একটাই বক্তব্য- এই জীবন রেখে লাভ নেই, সে মরতে চায়। তাকে নিরাপদে নামাতে সব কৌশল প্রয়োগ করছিল পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু তাতেও লাভ হচ্ছিলো না।
এর ঘণ্টা দুয়েক পর পেছন থেকে মান্না বড়ভুইয়া নামে এক যুবক দালান বেয়ে আচমকা অঙ্কিতের পা ধরে ফেলেন। মান্নার পেছনে পেছনে এগিয়ে যায় জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর এক জওয়ান। তখন ছাদ থেকে রশি ফেলা হলে দুজনে মিলে তার কোমর বেঁধে দেন। অন্যরা তাকে টেনে ছাদে নিয়ে যায়। তবে নীচে নামানোর পরেও অভিমান কমেনি তার। পিসিকেই নানাভাবে দোষারোপ করছিল অঙ্কিত।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব