বন্ধু বা পরিচিত মানুষের সংখ্যা কমে গেলে হঠাৎ কেমন করে বুকের ভেতর? কেন পরিচিতরা হারিয়ে যায় আপন শহর থেকে? সেই প্রশ্নের উত্তরই যেন এখন খুঁজতে হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের অনেক মানুষকে।
জেসিকা চোং নামের তরুণীও সেই অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। নিজের জন্মদিনের পার্টিতে নিমন্ত্রণের চিঠি লিখতে গিয়ে অকল্যান্ডের এই তরুণী দেখলেন তার অনেক পরিচিতই আর এই শহরে থাকছেন না। তিনি বুঝতে পারলেন, গত কয়েক মাসে তাদের অনেকেই বিদেশে চলে গেছেন। এতে দেশটিতে এখন পরস্পর পরিচিত মানুষের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। জেসিকার এমন অভিজ্ঞতা দেশটিতে চলতে থাকা নেতিবাচক প্রবণতাকেই প্রতিফলিত করছে।
জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় নিউজিল্যান্ডের অনেকে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানের অভাব 'ভয়াবহ' পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এতে করে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ নিউজিল্যান্ড ছাড়ছেন এবং দেশটিতে কেমন যেন পরিচিত মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। জেসিকার দেশটিকে কেমন যেন একটু খালি খালি মনে হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে জেসিকা জানিয়েছেন, যিনি নিজেই লন্ডনে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। 'এটি আসলে এক ধরনের আনন্দের বিষয় হতে যাচ্ছে। কারণে লন্ডনে আমরা আমাদের আত্মীয় ও বন্ধুদের খুঁজে পাবো এবং আড্ডা দিতে পারবো। এটি প্রত্যাশা হতে পারে না তবে তা আমাদের জন্য সুন্দর হবে।'
'স্ট্যাটিস্টিকস নিউজিল্যান্ড'-এর অস্থায়ী পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এক লাখ ৩১ হাজার ২০০ মানুষ নিউজিল্যান্ড ছেড়েছেন, যা এখন পর্যন্ত দেশটিতে সবচেয়ে বেশি।
কোভিড-১৯ মহামারির আগে এক বছরে দেশ ছেড়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ২০০ জন। সম্প্রতি যারা চলে গেছেন তাদের প্রায় ৪০ শতাংশের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৩০ বছরের এর মধ্যে।এমন বহির্মুখী গমন প্রক্রিয়ায় বিশেষজ্ঞরা শঙ্কিত হয়ে বলেন এদের অনেকেই আর মাতৃভূমিতে ফিরে আসবেন না। এমন প্রবণতা ধারণারও বাইরে। ওয়েলিংটনভিত্তিক পরামর্শদাতা সংস্থা ইনফোমেট্রিক্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্র্যাড ওলসেন আল জাজিরাকে বলেন, নিউজিল্যান্ড থেকে এমন মাত্রায় নাগরিক চলে যাওয়ার মতো ঘটনা আমরা আগে দেখিনি।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল