কেরানীগঞ্জের পানগাঁও খেয়াঘাট সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে গেছে। এতে এক নারী ও শিশুসহ ৮ জনের প্রানহানী ঘটেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, রাজধানী লালবাগের ওয়াহাব মাতব্বরের ছেলে রুবেল মাতব্বর (২০), একই এলাকার লাট মিয়ার ছেলে মো. সমির (৫০), হাফিজউদ্দিনের ছেলে রুবেল (৩৫), মিজানের ছেলে সাগর (১১), কাজল মিয়া (২৮), স্বপন (২২) করমজান বিবি (৬৫) ও মিরপুরের নূর উদ্দিনের ছেলে জাকির হোসেন (২৫)।
এদের মধ্যে জাকির ও রুবেল মাতব্বর ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে বিকালে নদী থেকে আরও ৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ট্রলারের আরেক যাত্রী সমির মারা যান।
জানা যায়, অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি চাদপুরের মতলব থানাধীন বেততলীর লেংটার মেলা থেকে ঢাকায় ফিরছিলো। দুপুর ২ টার দিকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় বেশিরভাগ যাত্রী সাতরে তীরে উঠতে পারলেও অনেকে ট্রলারের নিচে আটকা পড়েন।
ট্রলারের যাত্রী হাফিজ উদ্দিন (২৮) জানান, গত ২৭ মার্চ ট্রলারটি ভাড়া করে তারা লালবাগ থেকে লেংটার মেলায় যান। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ট্রলারটি ফতুল্লার কাছাকাছি আসলে একটি বলগেট তাদের বহনকারী ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে এটি ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার পর পরই স্থানীয় লোকজন উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পরে সদরঘাট ও নারায়নগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। একে একে তারা তুলে আনে ৮টি লাশ। তবে ট্রলারের কোন যাত্রী নিখোঁজ নেই বলে নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রলারের কোন যাত্রী নিখোঁজ আছে এমন দাবি নিয়ে কেউ আর আসছে না। তাছাড়া বিভিন্নভাবে অনুসন্ধান করার পরও কেউ নিখোঁজ আছে বলে জানা যায়নি। তাই আপাতত উদ্ধার তৎপরতা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ঢাকা জেলা প্রসাশক মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জমানসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
ট্রলার ডুবিতে নিহত যাত্রীদের দাফন সম্পন্ন করতে মৃতদেহ প্রতি ২০ হাজার টাকা করে প্রদান করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া নিহত যাত্রীদের স্বজনদের কাছে এ টাকা তুলে দেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ০২ এপ্রিল ১৫/ সালাহ উদ্দীন