সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেওয়ার পথে ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে আটক বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে রাজী হয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা আইওএম। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের একটি অনুরোধে সংস্থাটি সম্মতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় আইওএমের মুখপাত্র আসিফ মুনীর ।
চলতি মাসের শুরুতে থাইল্যান্ডের সঙ্খলার কয়েকটি জঙ্গলে ৩২টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। মানবপাচারকারীরা মুক্তিপণের লোভে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালেয়শিয়া যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের নির্যাতন চালিয়ে হত্যার পর এখানে কবর দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপরই টনক নড়ে আর্ন্তজাতিক সংস্থাগুলোর। আর নির্মম এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। ফলশ্রুতিতে আর্ন্তজাতিক চাপের মুখে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ড কঠোর অবস্থান নেয়। এরপরই মানবপাচারকারীরা সাগরে নৌকাবোঝাই অভিবাসীদের মাঝসাগরে ফেলে পালিয়ে যেতে শুরু করে। গত দুই সপ্তাহে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া উপকূলে বেশ কয়েকটি নৌকা থেতে প্রায় দুই হাজার অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই দেশ তিনটিতে তিন হাজারের মতো বাংলাদেশি আটক রয়েছে।
আসিফ মুনীর জানান, অভিবাসীদের ফিরিয়ে আনতে জরুরী ভিত্তিতে ১০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি তহবিল মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রথমে মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে।
এদিকে, ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন আইওএম জানায়, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং স্থানীয় বাংলাদেশ দুতাবাসগুলোর সহযোগিতায় আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের তালিকা তৈরীর কাজ শুরু হয়ে গেছে। মালয়েশিয়ার লাংকাউয়ি দ্বীপে কয়েকটি নৌকায় পৌঁছানো অভিবাসীদের মধ্যে প্রায় সাতশ' বাংলাদেশি রয়েছে। এছাড়া অভিবাসী ভর্তি যে দুটি নৌকা গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার জেলেরা উদ্ধার করেছে তাতে ছয় থেকে সাতশ' বাংলাদেশি রয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, আটক বাংলাদেশিদের সংখ্যা থাইল্যান্ডে অনেক বেশি। গত দু’তিন বছর ধরে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে থাইল্যান্ডে তাদের অনেকে আটক হয়েছে। থাই ও বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন কারাগারে এবং বন্দী শিবিরে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বাংলাদেশি আটক রয়েছে। তবে দেশে ফিরিয়ে আনার আগে, আটককৃতদের নাগরিকত্ব শনাক্ত করবে বাংলাদেশ সরকার।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ মে ২০১৫/শরীফ