বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন প্রায় আড়াই হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন জার্মান হ্যামার পদ্মা সেতুর মুল পাইলিং কাজের জন্য মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে আজ বুধবার সকালে মাঝ পদ্মায় পৌঁছে নোঙরে রয়েছে। এ খবর পেয়ে বিকাল ৪টার দিকে পদ্মাপাড়ে ছুটে আসেন সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের জন্য ২৪০০ টনের ক্ষমতাসম্পন্ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যামারটি এখন মাওয়ার মাঝ পদ্মায় পাইলিং কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। গত প্রায় ৮ দিন আগে মংলা নৌ বন্দর থেকে মাওয়ার উদ্দেশ্যে এটি রওয়ানা হয়। এখানে পৌঁছাতে ৮ দিন সময় লাগল।
আগামী ১লা জুলাই থেকে এর ব্যবহার শুর’ হবে এবং অক্টোবরে মূল পাইলিং কাজের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ তিনি আরো বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সমস্ত কাজ সিডিউল অনুযায়ী অত্যন্ত সুচারুরূপে এগিয়ে চলছে। এ কাজ সিডিউল অনুযায়ী পিছিয়ে নেই বরং এগিয়ে আছে। দেশের অন্যতম এই সেতু বাস্তবায়ন কাজের জন্য বিশ্ব সেরা এই হ্যামরটি আসার খবর পেয়ে আমি এটাকে এক নজর দেখার জন্য এখানে ছুটে এসেছি। এটা দেখে এখন মনে খুব আনন্দ অনুভব করছি। আমার মনে হয় দেশবাসীও খুব আনন্দিত হয়েছে।’
আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার সময় মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু কাজে ব্যবহারের জন্য আসা জার্মান হ্যামারটি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় মন্ত্রী মাঝ পদ্মায় থাকা হ্যামারটি ঘুরে ঘুরে দেখান পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ’র প্রজেক্ট ম্যানেজার লিউজিন হুয়াকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক ইকবাল, যুবলীগ নেতা শাহ আলমসহ সেতু বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এদিকে, পদ্মাপাড়ে বিশালাকায় এই হ্যামারটি দেখার জন্য জনতার ভিড় জমেছে। পদ্মার মাওয়া প্রান্তে ছুটে আসছে আশেপাশের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শত শত উৎসুক মানুষ। আগামী অক্টোবরে এই হ্যামার দিয়ে পদ্মা বক্ষে বসানো হবে ৪০ তলাসম এক একটি পিলার। মূল পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬.১৫ কিলোমিটার। দুইতলা বিশিষ্ট এ সেতুর নিচ তলা দিয়ে রেল ও উপর তলা দিয়ে বাসসহ অন্যান্য ভারী যান চলাচল করবে। এ সেতুর পাইলগুলোর ১২০ মিটার বা ৪০ তলা ভবনের সমান কাঠামো পানির নিচে থাকবে। সব মিলিয়ে সেতুটির একেকটি পাইলের দৈর্ঘ্য হবে ১৫০ মিটার। সেতুর ট্রায়াল পাইলের মূল কাজ শুরু হওয়াকে কেন্দ্র করে পদ্মাপাড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এই প্রথম নিজস্ব অর্থায়নে বড় কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। পদ্মাসেতু নির্মিত হলে ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ অঞ্চলের ২১টি জেলার যোগাযোগ নিশ্চিত হবে।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ মে ২০১৫/শরীফ