নিজেকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে আঁধারকে জয় করার শপথ নিলেন হাজারো নারী। এ সময় মুখে ছিল স্লোগান- 'ঘরে বসে আর থাকব না, নির্যাতনের স্বীকার হবো না, প্রতিবন্ধকতাকে রুখবো, আলোর পথে চলবো, ভয়কে পেরিয়ে এগিয়ে যাবো সামনে।' নারীর এ শপথে সঙ্গী হয়েছিলেন হাজারো পুরুষ। দু'য়ে মিলে হাতে হাত ধরে সব বাধা আর প্রতিবন্ধকতা জয়ের শপথ ধ্বনিতে নিস্তব্ধতা ভাঙলো মধ্যরাতের।
ঘড়িতে তখন রাত ১১টা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজারো নারী-পুরুষের পদচারণা। রাত ১২ টা বাজার সাথে সাথেই অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রথম প্রহরেই সবার হাতে ধরে রাখা মোমবাতির আলো যেন আধারকে জয় করার প্রত্যয়ই ব্যক্ত করল।
সব বাধা আর প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে নারী-পুরুষের অঙ্গীকারে সমতার বিশ্ব গড়ে তোলার শপথ গ্রহণ করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে মোমবাতি প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রথম কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রতি বছরের মতো এবারও আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যেগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রাত ১২ টা ১ মিনিটে 'আধার ভাঙার শপথ' নামক এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, আমরাই পারি জোটের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, নেদারল্যান্ড অ্যাম্বাসির অ্যাম্বাসেডর লিওনী এম.কুলেনারে, নেদারল্যান্ড অ্যাম্বাসির ফার্স্ট সেক্রেটারি এলা ডি ভুক্ষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আমরাই পারি জোটের কো চেয়ারম্যান শাহীন আনাম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রাখি দাস, অক্সফ্যাম প্রতিনিধিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ''আমরা আধার ভাঙবো, আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো, আমরা বাধা ঠেলে এগিয়ে যাবো। বর্তমান সরকার নারীদের উন্নয়ন এবং তাদের সার্বিক মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, নারীরা যাতে পুরুষদের থেকে পিছিযে না পড়ে সেজন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। যে কারণে আজকে সকল ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অবস্থান দেখা যাচ্ছে।''
এসময় তিনি উপস্থিত সকল নারীদের নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদেরকে আধার ভাঙার শপথ পাঠ বাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে আমরাই পারি জোটের চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল বলেন, ''নারীর জীবনের অন্ধকার, ঘরের অন্ধকার, বাহিরের অন্ধকার, অন্তরের অন্ধকার দূর করে নারী তার নিজের আলোয় আলোকিত হোক। নারী পুরুষের সক্রিয় অংশগ্রহনে গড়ে উঠুক আধুনিক বিশ্ব। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র –সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সম-অধিকার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। তাই নারী-পুরুষের বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে একটি সমতাপূর্ণ মানবিক সমাজ গঠণে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।''
বিডি-প্রতিদিন/০৮ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ